ঘুষ নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে স্থাগিত হওয়া মেসার্স প্রাইম ক্লিয়ারিং হাউসের লাইসেন্স স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারসহ ছয় দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) বেলা ১২টা থেকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সামনে প্রায় পাঁচশ’ সিএন্ডএফ এজেন্টের উপস্থিতিতে এ বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।এতে বন্ধ হয়ে পড়ে শুল্ক আদায় কার্যক্রম।
চট্টগ্রাম সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন, ৬০ হাজার টাকা ঘুষ না দেওয়ায় বুধবার (১৬ জুন) ৮-বি শুল্কায়ন শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন সিএন্ডএফ এজেন্ট প্রাইম ক্লিয়ারিং হাউস এর মালিক রফিকুল ইসলামের সাথে অসৌজন্য আচরণ করেন। এমন অন্যায় আচরণ সত্ত্বেও কাস্টমের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ভুল বার্তা দিয়ে মাত্র ১০ মিনিটের মাথায় ওই সিএন্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। কাস্টম কর্মকর্তাদের এমন অপেশাদার আচরণ নিয়ে আমাদের ফেডারেশনের সাথেও আলোচনা চলছে।
প্রাইম ক্লিয়ারিং হাউসের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, চীন থেকে আমদানি হওয়া কার্টার (কার্টার মেশিন) খালাসের জন্য শুল্কায়ন চলছিল ৮ -বি শুল্কায়ন শাখায়। শুল্কায়ন প্রক্রিয়ায় রাজস্ব কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বিভিন্নভাবে হয়রানি করছিলেন। তার চাহিদামতো ঘুষ না দেওয়ায় আমাকে হেনস্থা করেন। উল্টো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে আমার প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত করেছেন।
সিএন্ডএফ এজেন্টদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস পাহাড় সমান সমস্যা নিয়ে চলছে। ঘুষ-দুর্নীতিসহ স্পিড মানির নামে আদায় করা সব অবৈধ লেনদেন বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে ঘুষের অঙ্ক নিয়ে কথা কাটাকাটির কারণে মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে মেসার্স প্রাইম ক্লিয়ারিং হাউস এর লাইসেন্স স্থগিতাদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে রাজস্ব কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেন, শুল্কায়নে অনৈতিক সুবিধা নিতে চেয়েছিলেন এজেন্ট রফিকুল ইসলাম। তার প্রস্তাব গ্রহণ না করায় আমাকে মারতেও উদ্যত হন। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার সুলতান মাহমুদ বলেন, কাস্টমস কর্মকর্তার সাথে অসৌজন্য আচরণের কারণে বুধবার প্রাইম ক্লিয়ারিং হাউস এর লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সিএন্ডএফ এজেন্টরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করবেন।
উল্লেখ্য, প্রতিদিন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে প্রায় ৭ হাজার বিল অব এন্ট্রি দাখিল হয়। দৈনিক রাজস্ব আদায় হয় প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ কোটি টাকা।