ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করেছে সরকার। রোববার (১২ অক্টোবর) এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কারা-১ শাখা থেকে প্রজ্ঞাপনের কথা সোমবার (১৩ অক্টোবর) জানানো হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশে প্রজ্ঞাপনে সই করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপসচিব মো. হাফিজ-আল-আসাদ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮’-এর ধারা ৫৪১ (১)’-এর ক্ষমতাবলে এবং দ্যা প্রিজনস অ্যাক্ট ১৮৯৪’- এর (১৮৯৪ এর ৯) ধারা ৩ (বি) অনুসারে, ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোড সংলগ্ন উত্তর দিকে অবস্থিত ‘এমইএস’ বিল্ডিং নম্বর ৫৪-কে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হলো।’
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ ঘোষণা জারি করা হয়েছে এবং এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চার্জশিটে নাম আসা সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৫ জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনা সদর।
শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকালে ঢাকা সেনানিবাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে ব্রিফিংয়ে মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান এ তথ্য জানান।
সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে মোট ২৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের মধ্যে এলপিআরের একজন এবং সার্ভিসে থাকা ১৫ জনসহ মোট ১৬ জনকে সেনা সদরে সংযুক্ত হতে বলা হয়। ৯ অক্টোবরের মধ্যে সেনা সদরে আসার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। এরমধ্যে মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ ছাড়া বাকি ১৫ জন এসেছে।’
এলপিআরে থাকা একজনসহ ১৫ জনকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, ‘একজন আত্মগোপনে রয়েছেন। বাকি ৯ জন অবসরে গেছেন।’
বলে রাখা ভাল, গুমের ২ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে গেলো বুধবার (৮ অক্টোবর) গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে ডিজিএফআইয়ের সাবেক ৫ প্রধানসহ ২৫ জন সেনা কর্মকর্তা রয়েছেন। যা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা। কারণ দেশের ইতিহাসে চাকরিরত অবস্থায় এত সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা― এটাই প্রথম।
আগামী ২১ অক্টোবরের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করে ২২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের গ্রেফতারি পরোয়ানা এবং সেনা সদরের ব্রিফিংয়ের পর সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করার কথা জানালো সরকার। তবে কোন উদ্দেশ্যে ভবনটি সাময়িক কারাগার হিসেবে ব্যবহৃত হবে, সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়নি।