চট্টগ্রাম: ‘সাংসদ-মন্ত্রীদের বিচারকার্য পরিচালনার জন্য কোন এজলাস থাকে না। কিন্তু দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সহজ ও সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে গ্রাম আদালতের এজলাস রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কিংবা ভারপ্রাপ্ত প্যানেল চেয়ারম্যানদের বিষয়টির সর্বোচ্চ গুরুত্ব অনুধাবন করতে হবে। গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ছোটখাট বিরোধ-বিবাদ নিষ্পত্তি হলে গ্রামের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর যেমন উপকার হয়, অন্যান্য উচ্চ আদালতেও মামলার চাপ কমে।’
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকাল ১০টায় প্রাইমারি টিচার্স ইন্সটিটিউটের (পিটিআই) মিলনায়তনে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের আয়োজনে চট্টগ্রামে জেলা পর্যায়ে গ্রাম আদালত কার্যক্রমের বার্ষিক অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করণীয় শীর্ষক সভায় এসব কথা বলেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাহবুবুল হক।
চট্টগ্রাম জেলার স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মো. নোমান হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলার সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ভারপ্রাপ্ত প্যানেল চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ড সদস্য।
সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ তৃতীয় পর্যায় প্রকল্পের কারিগরি সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ইউএনডিপি বাংলাদেশের প্রজেক্ট এনালিস্ট শাহাদাত হোসেন এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন সহযোগী সংস্থা ইপসার পরিচালক (অর্থ) পলাশ চৌধুরী। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইমরান মাহমুদ ডালিমের সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ তৃতীয় পর্যায় প্রকল্পের চট্টগ্রামে জেলার ব্যবস্থাপক সাজাদুল আনোয়ার ভুইয়া।
সভায় উঠে আসে, বিগত এক বছরে চট্টগ্রামের ১৯১ টি ইউনিয়নে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে বিচারের জন্য ২৬২২টি মামলার আবেদন করা হয়। যার মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ২৩০৫ টি মামলা। এর মধ্যে ৬২১ টি মামলার আবেদনকারী নারী। এছাড়া, এক বছরে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে একাত্তর লাখ ৯৫ হাজার ৪৭৪ টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় পূর্বক আবেদনকারীদের হস্তান্তর করা হয়েছে।
সভায় বক্তারা বলেন, ‘স্থানীয় বিরোধ-বিবাদ নিষ্পত্তির জন্য গ্রাম আদালতের বিকল্প নেই। বিশেষ করে স্থানীয় পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, নারী এবং প্রতিবন্ধীসহ সকলের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার অন্যতম বিচারিক কাঠামো গ্রাম আদালত। বর্তমান প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম জেলার বেশ কিছু ইউনিয়নে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম চালানো কষ্টসাধ্য হচ্ছে। এসব ইউনিয়নে বিচারিক সেবা নিশ্চিতে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে।’