চট্টগ্রাম: নগরীর সৌন্দর্য রক্ষা ও নাগরিক দুর্ভোগ এড়াতে চট্টগ্রাম নগরীর সড়ক ও ফুটপাত দখল করে ব্যবসায় করা চলবে না বলে সতর্ক করেছেন সিটির মেয়র শাহাদাত হোসেন।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) নগরীর পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন হোটেল সৈকতের পাশে সড়ক দখল ঠেকাতে ফুলের টব স্থাপন ও সৌন্দর্যবর্ধন কর্মসূচির উদ্বোধন করার সময় তিনি এ সতর্কবার্তা দেনন।
এ সময় শাহাদাত হোসেনন বলেন, ‘দোকানদাররা দোকানের ভিতরে মাল রাখতে পারে। কিন্তু তারা ফুটপাতও দখল করে ফেলেছে, রাস্তাও দখল করে ফেলেছে। বেশ কয়েকদিন ধরে এটা অবজার্ভ করছিলাম। আগেও একবার এখানে এসেছিলাম। দেখলাম সমস্ত ফল- কাঁঠাল, আম, তাল যতকিছু আছে পুরা রাস্তার অর্ধেক জুড়ে এরা দখল করে থাকে। যার কারণে এখানে যানজট লেগে থাকে। পথচারীদের চলাচল ব্যাহত হয়। রেলপথে চট্টগ্রামে আসা দেশি-বিদেশি অতিথিরা প্রথমেই ষ্টেশন রোড হয়ে শহরে প্রবেশ করেন। এতে চট্টগ্রামের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠে। তাই এই জায়গাটিকে সুন্দর ও শৃঙ্খলাপূর্ণ রাখা জরুরি।’
দোকানদারদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, ‘কোনো দোকানদার ফলমূল বা পণ্য ফুটপাতে ডিসপ্লে করতে পারবেন না। সমস্ত পণ্য দোকানের ভেতরেই রাখতে হবে। লোডিং ও আনলোডিংয়ের কাজ রাত ১১টা থেকে সকাল ৯ টার মধ্যে শেষ করতে হবে।’
এ সময় গাছের টবগুলো দোকানদাররা এক পাশে সরিয়ে রাখবেন, কাজ শেষে আবার সঠিকভাবে বসিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দেন তিনি।
মেয়র আরও বলেন, “আমরা পর্যায়ক্রমে প্রতিটি স্পট চিহ্নিত করে ফুটপাত ও রাস্তা দখলমুক্ত করব। ইতোমধ্যে উচ্ছেদকৃত স্থানে গাছ লাগানো শুরু হয়েছে। পুরো শহরকে ধীরে ধীরে সবুজায়নের আওতায় আনা হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনেও আমরা ৫০-৬০ শতাংশ অগ্রগতি অর্জন করেছি। আগামী বছর নাগরিকরা এর আরও ভালো ফল পাবেন।’
তিনি জানান, নগরীতে কাতালগঞ্জ ও বিপ্লব উদ্যানের পিছনের স্থানসহ যেসব জায়গায় উন্মুক্তভাবে আবর্জনা পড়ে থাকে সেরকম ১২টি স্থানে সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) স্থাপন করা হবে। কাভার দেওয়া এসটিএসের মাধ্যমে শহরকে পরিচ্ছন্ন ও দৃষ্টিনন্দন রাখা হবে এবং ওয়েস্ট টু এনার্জি প্ল্যান্ট স্থাপনের লক্ষ্যে জাপান ও কোরিয়ার কোম্পানির সঙ্গে কার্যক্রম দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রামের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।
মশক নিধন কার্যক্রম প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘প্রতিদিন ফগার মেশিনের মাধ্যমে কেমিক্যাল স্প্রে করা হচ্ছে। তবে একই ওষুধ দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে মশা প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে ফেলে। এজন্য আমরা নিয়মিত ওষুধ পরিবর্তন করছি। সম্প্রতি শিকাগোর একটি গবেষণা কেন্দ্রের তৈরি নতুন ওষুধ আনা হয়েছে। এটি ইতোমধ্যে কোতোয়ালি, হালিশহর ও বায়েজিদসহ কয়েকটি এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি এলাকায় প্রয়োগ করে ভালো ফল পাওয়া গেছে। দ্রুত এটি নগরের সর্বত্র প্রয়োগ করা হবে।’
এ সময় নগর পরিকল্পনাবিদ আবদুল্লাহ আল ওমর, বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মঈনুল হোসেন আলী জয়, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী (মারুফ), জিয়াউর রহমান জিয়া, হকার নেতৃবৃন্দের মধ্যে আব্দুল বাতেন, জসিম মিয়া, জসিম উদ্দিনসহ চসিক পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।