চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরীর ভাঙা ও ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক দ্রুত সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছেন সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন। ভারী বর্ষণ ও বিভিন্ন সেবা সংস্থার প্রকল্প বাস্তবায়নের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এসব সড়ক নগরবাসীর দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, “এই সড়কগুলো দ্রুত সংস্কার করতে হবে। জনদুর্ভোগ যেন আর না বাড়ে। সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল বিভাগকে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করতে হবে।”
সোমবার (৪ আগস্ট) টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে সড়ক সংস্কার ও জলাবদ্ধতা নিরসন বিষয়ক সভায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তাদের তিনি এ নির্দেশ দেন। সভায় তিনি চসিকের প্রকৌশল বিভাগের পুরকৌশল উপ-বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীগের কাছে তাদের স্ব স্ব জোনের অবকাঠামোগত সমস্যা ও জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হন এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, সংস্কার কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হবে। নগরবাসীকে ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিতে আমরা দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেব। সড়ক সংস্কার কাজে গাফিলতি বরদাশত করা হবে না। জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত এবং মানসম্মত কাজ নিশ্চিত করতে হবে। যেসব ঠিকাদার ঠিকমতো কাজ করছেন না, তাদের ওয়ার্ক অর্ডার বাতিল করুন। কোনো প্রকৌশলী দায়িত্বে ফাঁকি দিলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিন। যদি লোকবল ঘাটতি থাকে, তবে নতুন নিয়োগের ব্যবস্থা করুন এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কিনে দ্রুত সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করুন।”
মেয়র আরও বলেন, “সড়ক নির্মাণ ও সংস্কারে ব্যবহৃত বিটুমিনসহ সকল নির্মাণ সামগ্রীর গুণগত মান নিশ্চিত করতে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করাতে হবে। কোনো ঠিকাদার যদি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে নিম্নমানের মালামাল সরবরাহ করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে মামলা করুন। কাজের মান বজায় রাখতে কোনো প্রকার আপস করা যাবে না।”
তিনি বলেন, “নগরীতে জলাবদ্ধতার সমস্যা অনেকটা কমে এলেও সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাত ও জোয়ারে কিছু এলাকায় পানি উঠেছে। নালা-নর্দমা উন্নয়ন ও পানি নিষ্কাশনের পথগুলো সচল রাখতে কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।”
সভায় মেয়র শহরের নিরাপত্তা বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুরাদপুর-লালখান বাজার ফ্লাইওভারের নাট-বল্টু চুরি ও সবুজায়নের জন্য তৈরি নিরাপত্তা বেষ্টনী অপসারণের ঘটনা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “ফ্লাইওভারের নাট-বল্টু খুলে ফেলা এবং সুরক্ষা বেষ্টনী চুরির ঘটনায় কিশোর গ্যাং ও মাদকসেবীরা জড়িত রয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর নজরদারি করতে হবে। পাশাপাশি, এসব তরুণদের কাউন্সেলিং ও পুনর্বাসনে প্রশাসনকে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।”
সভায় চসিক প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম, নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, আনোয়ার জাহান, রিফাতুল করিম, তাসমিয়া তাহসিন, মাহমুদ শাফকাত আমিন, শাফকাত বিন আমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।