নারায়ণগঞ্জ: ভাষাসৈনিক আবদুর রাজ্জাক মাস্টার স্মৃতি বৃত্তি প্রদান ও দোয়া অনুষ্ঠান বুধবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর উপকণ্ঠ সানারপাড় অবস্থিত ফাইভ ওয়ে চায়নিজ রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিকে বুকে ধারণ করে ৭টি স্কুলের ৫২ জন বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীসহ শতাধিক কৃতি শিক্ষার্থীকে ক্রেস্ট দিয়ে সংবর্ধনা দেয়া হয়। পাশাপাশি জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও মাইলস্টোনের বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে এবং ভাষাসৈনিক আবদুর রাজ্জাক মাস্টারের বিদেহী আত্মা্র মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
‘ভাষাসৈনিক আবদুর রাজ্জাক মাস্টার স্মৃতি পরিষদ’ আয়োজিত ওই বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব মোহাম্মদ সাগর হোসেন।
তিনি সুশিক্ষা ও নৈতিক শিক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের হাতে মোবাইল ফোন তুলে দেবেন না। প্রধান আলোচক ছিলেন ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাবের বিশেষ সংবাদদাতা সাঈদ আহমেদ খান।’
তিনি শিক্ষার্থীদের মানসিক উৎকর্ষ সাধনে সঠিক বিনোদন ও প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি করতে এমন উদ্যোগ নেয়ায় ভাষাসৈনিক আবদুর রাজ্জাক মাস্টার স্মৃতি পরিষদকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভাষাসৈনিক আবদুর রাজ্জাক মাস্টারের সহধর্মিনী নহিজা বেগম।
বাবার কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন দৈনিক ইনকিলাবের সিনিয়র সাব এডিটর ও ভাষাসৈনিক আবদুর রাজ্জাক মাস্টার স্মৃতি পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ আবদুল অদুদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন গণপূর্ত অধিদফতরের সহকারী প্রকৌশলী ও ঢাবি সমাজকল্যাণ এলামনাই ফোরামের সভাপতি মোহাম্মদ নওশাদুল হক, সিনিয়র সাংবাদিক গোলাম মোস্তফা রুমী, ডেমরা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর নায়লা ইসলাম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার আমীর মাহবুবুল আলম, এটিএন নিউজের জেলা প্রতিনিধি হাসান মজুমদার বাবলু, পূর্ব সাহেবপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি মোবারক হোসেন খান, সাধারণ সম্পাদক সহিদুল হক খান ঝন্টু, সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার সোহেল রানা, সরকারি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের সুপারিনটেন্টডেন্ট এবিএম সাইফুর রহমান, মাদারল্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম নয়ন, সমাজসেবক সাজেদুল ইসলাম পনি, আনসার আলী মাস্টার, আমিরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ মোস্তফা প্রমুখ।
বক্তারা এ প্লাস বা বৃত্তির ক্ষেত্রে অনৈতিক পথে সন্তানকে ঠেলে না দিয়ে ভালো পড়াশোনা ও সন্তানকে নৈতিক শিক্ষায় আদর্শ মানুষ হয়ে গড়ে ওঠার উপর গুরুত্বারোপ করতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান করেন। তারা ভাষাসৈনিক আবদুর রাজ্জাক মাসটারের কর্মময় জীবনের নানাদিক তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, ‘তার ছাত্রদের অনেকে এখন দেশের নানাক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশ এডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস এসোসিয়েশনের সভাপতি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম, কৃষিবিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ মোহসীন, ফিল্ম ও আর্কাইভসের ডিজি মো. আবদুল জলিল ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সাবেক কনসালটেন্ট প্রকৌশলী মো. ফরিদ উদ্দিনসহ অনেক মণিমানিক্য তিনি তৈরি করে গিয়েছেন।’
বক্তারা এই ভাষাসৈনিকের নামে কুমিল্লার একটি সড়কের নামকরণ করে গেজেট প্রকাশ ও দেশের সকল ভাষাসৈনিকদের পরিপূর্ণ তালিকা গেজেটভুক্ত করার দাবি করেন। পরে মোহাম্মদ সাগর হোসেন ও অন্য অতিথিরা আল-হেরা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সাবেক দুই কৃতি শিক্ষার্থী এসএসসিতে এ+ প্রাপ্তির জন্য আবদুল্লাহ নাকিব ও স্পেস এক্সপ্লোরেশন অলিম্পিয়ার্ডে জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ান হওয়ার জন্য আমিনুর রহমান ছাজিমসহ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে বৃত্তির টাকা, ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেন।