চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে না দেওয়া, বাংলাদেশে বিদেশিদের সামরিক কারখানা স্থাপন রোধ, মানবিক করিডোরের নামে ভূখণ্ড ব্যবহারের অনুমতির বিরোধিতা ও স্টারলিংকের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের দাবিতে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডমার্চের সমাপ্তি হয়েছে।
শনিবার (২৮ জুন) বিকাল ৫ টায় চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম বন্দর ভবনের সামনে সমাপনী জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে রোডমার্চটি ফেনী থেকে যাত্রা শুরু করে বারৈয়ারহাট ও সীতাকুণ্ডে পথসভা শেষে মিছিল সহকারে শহরে প্রবেশ করে এবং বারিক বিল্ডিং থেকে পদযাত্রা করে বন্দর ভবনে সমবেত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি। বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, গণমুক্তি ইউনিয়নের সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন নাসু, সাম্যবাদী আন্দোলনের আহ্বায়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, বাসদের (মার্কসবাদী) মাসুদ রানা, বাসদের হারুনুর রশিদ ভূঁইয়া, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের মাসুদ খান, জাতীয় গণফ্রন্টের রজত হুদা, জাসদের মুশতাক হোসেন, সোসালিস্ট পার্টির শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের মধ্যে উপস্থিত ছিলে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র ইউনিয়ন, গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বাসদ চট্টগ্রাম জেলা ইনচার্জ আল কাদেরি জয়।
বক্তব্য দেন রাজা মিয়া (গণমুক্তি ইউনিয়ন), শফি উদ্দিন কবির আবিদ (বাসদ-মার্কসবাদী), শাহীন মনজুর (সাম্যবাদী আন্দোলন), নুরুচ্ছফা ভূঁইয়া (সিপিবি) ও নুরুল আলম মন্টু (জাসদ)। সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেন শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ।
সভায় নেতারা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব ছিল জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার, গণতান্ত্রিক সংস্কার ও নির্বাচন আয়োজন। এসব কার্যক্রমে কোনো অগ্রগতি নেই, উল্টো দেশের কৌশলগত সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বিদেশি কোম্পানিকে নিউমুরিং টার্মিনাল লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত জাতীয় স্বার্থবিরোধী ও একতরফা।’
তারা আরো বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে দেশের ৯২ ভাগ আমদানি-রপ্তানি সম্পন্ন হয়। এ ধরনের কৌশলগত অবকাঠামো নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সতর্কতা ও জাতীয় স্বার্থে গণআলোচনার প্রয়োজন। বিদেশি কোম্পানিকে টার্মিনাল লিজ দেওয়ার অপচেষ্টা, মানবিক করিডোর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ও সামরিক শিল্প স্থাপনের অনুমতি দেশকে দীর্ঘমেয়াদে বিপদের মুখে ফেলবে।’
নেতারা সরকারের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘দেশের স্বার্থবিরোধী এ ধরনের তৎপরতা অবিলম্বে বন্ধ না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে এবং আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’