চট্টগ্রাম: নিত্য-ব্যবহার্য ও ভোগ্যপণ্য (এফএমসিজি) উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার বাংলাদেশ সম্প্রতি চট্টগ্রামের তরুণদের জন্য “ইয়ুথ জার্নালিজম অন এনভায়রনমেন্ট: আ ফোকাস অন প্লাস্টিক ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট” শীর্ষক তিন দিনব্যাপী পরিবেশ সাংবাদিকতার কর্মশালার করেছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) এবং ইয়ং পাওয়ার ইন সোস্যাল অ্যাকশনের (ইপসা) সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পরিচালিত ইউনিলিভার বাংলাদেশের প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
এই কর্মশালার লক্ষ্য তরুণদের পরিবেশবিষয়ক সাংবাদিকতায় উৎসাহিত করা এবং প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সচেতনতা ও জ্ঞানের প্রসার ঘটানো, যাতে তারা জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই নগরায়ণের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তথ্যভিত্তিক ও কার্যকর বার্তা সমাজে পৌঁছে দিতে পারে।
গত বছর শুরু হওয়া এই কর্মশালার ধারাবাহিকতায়, চলতি বছর প্রাথমিক পর্যায়ে ১৬৭ জন তরুণ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণের সুযোগ পান। তাদের মধ্য থেকে মূল্যায়নের ভিত্তিতে ৪০ জনকে বাছাই করা হয়। পরবর্তী বিভিন্ন ধাপের লিখিত পরীক্ষা ও চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই শেষে ২০ জন নির্বাচিত শিক্ষার্থী তিন দিনব্যাপী এই কর্মশালায় অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করেন।
কর্মশালার প্রথম দিনেই দেশের খ্যাতিমান সাংবাদিকদের তত্ত্বাবধানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন ফিল্ড ভিজিটে অংশ নেন, যা তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনে সহায়ক হয়। পরবর্তী দুই দিনে শিক্ষার্থীরা ‘ফান্ডামেন্টাল অব জার্নালিজম’, ‘মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম’, ‘ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম’ ও ‘ডিজিটাল জার্নালিজম’ বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
তিন দিনের এই কর্মশালা শেষে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তরুণদের হাতে সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষকদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ইপসার প্রধান নির্বাহী মো. আরিফুর রহমান, ইউনিলিভার বাংলাদেশের ফ্যাক্টরি হেড এসএম তারিক সাইফুল্লাহ।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, ইউনিলিভার বাংলাদেশ ও ইপসার মধ্যে স্বাক্ষরিত ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প শুরু হয়। এ প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত ২৪ হাজার টনেরও বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ৩ হাজারের অধিক বর্জ্যকর্মী ও সংগ্রাহককে প্রশিক্ষণ ও সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে এবং ১ হাজার ৮২৭ জনকে গ্রুপ ইন্স্যুরেন্সের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া, ৭১টি স্কুলের প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থী এবং ১৫ হাজার পরিবারের মধ্যে প্লাস্টিক বর্জ্য পৃথকীকরণ ও রিসাইক্লিং সংক্রান্ত সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। প্রকল্পটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই শহর গঠনের মডেল হিসেবে কাজ করছে, যেখানে নাগরিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব নগর গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।