চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে এক দিন পুরো দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় ক্যান্সার হাসপাতাল হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘ইচ্ছে ও নিবেদিত প্রাণ থাকলে মানুষ যেটা চায় সেটাই হয়।’
শনিবার (৩ মে) দুপুরে নগরীর আগ্রাবাদস্থ চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে দৈনিক আজাদীর সার্বিক সহযোগিতায় চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ক্যান্সার ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টারের মালেকা খাতুন অনকোলজি ওয়ার্ডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনুষ্ঠানে আমীর খসরু আরো বলেন, ‘ক্যান্সার রোগী ও তার পরিবারকে স্বস্তি দেওয়ার একমাত্র পথ হচ্ছে, তাদের আশ্বস্ত করতে হবে যে চিন্তার কিছু নেই। এখন কিছুটা হলেও ক্যান্সারের চিকিৎসা আছে। সময়মতো চিকিৎসা নিলে ক্যান্সার সারানোর উপায়। এখন সুবিধা হয়েছে যে, আগে মানুষের ক্যান্সার হলে চিকিৎসা ছিল না। কিন্তু এখন সময়মতো যদি চিকিৎসা নেয়া যায়, তাহলে রোগ কিছুটা সারানো সম্ভব। সেজন্য চট্টগ্রামে আজকে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, এটা অনেক বড় একটা উদ্যোগ। বড় একটা কর্মযজ্ঞ। আমি নিশ্চিত, যে জিনিসটা শুরু হয়েছে একটা ভালো উদ্যোগের মাধ্যমে এটা অনেক উপরে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘এ উদ্যোগে একসময় গিয়ে পুরো বাংলাদেশের মধ্যে চট্টগ্রাম সবচেয়ে বড় ক্যান্সার হাসপাতাল হতে পারে। এটার সুযোগ আছে। কারণ, ইচ্ছে ও নিবেদিত প্রাণ থাকলে মানুষ যেটা চায় সেটাই হয়। কেননা অনেক দেশে এসব ব্যক্তিগত উদ্যোগ থেকে হয়েছে।’
যতটুকু প্রয়োজন তা করতে পারেননি জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা এখানে যতটুকু করার প্রয়োজনীয়তা ছিল তা করতে পারিনি। কারণ, এ ধরনের একটা বিরাট কর্মযজ্ঞ এখানে কিন্তু একা করা যায় না। এখানে সহযোগী শক্তি সবচেয়ে বড়। আজকে মালেকা খাতুন অনকোলজি যেই ওয়ার্ড চালু হলো, এটার উদ্যোগ অনেক বড়।’
আগে বলা হতো চট্টগ্রামে কোনো চিকিৎসা নেই, সেটা অনেক দুঃখের বিষয় ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে চট্টগ্রাম সম্পর্কে যখন চিকিৎসার কথা বলা হয়, প্রথম কথা সবাই বলে ওখানে কোনো চিকিৎসা নেই। ঢাকা, ইন্ডিয়া, থাইল্যান্ড যাও, চট্টগ্রামে কোনো চিকিৎসা নেই। এ কথাটা যে শুনতে হয়, এর চেয়ে দুঃখের আর বেশি কিছু নেই৷ কারণ, আমাদের চট্টগ্রামের মানুষ খুব দয়াবান মানুষ। যদিওবা আমাদের সংস্কৃতিতে চ্যারিটিটা বেশি করতে পারি নাই, শিখি নেই, কালচারে নেই। দুর্ভাগ্যবশত হলেও এটা সত্য কথা।’
আমির খসরু আরও বলেন, ‘তবে চ্যারিটির মাধ্যমে যে জনসেবা, ওই যে রিলিফের পণ্য দেওয়া, রমজানে শাড়ি দেওয়া, এগুলো ব্যক্তিগতভাবে হয়ত ঠিক আছে। কিন্তু এগুলো খুবই ছোটখাটো ব্যাপার। সমাজকে যদি সেবা করতে চাই, তাহলে আমাদের ফোকাসটা হতে হবে অনেক বড়। কাজের মাধ্যমে সমাজ যেখানে সার্বিকভাবে উপকৃত হবে। বিশেষ করে সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষ কীভাবে উপকৃত হবে, সেখান থেকেই শুরু করতে হবে।’
‘চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের উদ্যোগটাও কিন্তু সেই জায়গা থেকে শুরু হয়েছিল। সাধারণ মানুষ যারা চিকিৎসার খরচ বহন করতে পারে না, তাদের জন্যই এ হাসপাতাল চিকিৎসা সেবা হিসেবে শুরু করা হয়েছিল। এবং সেই চিন্তাভাবনা, ধ্যানধারণা অব্যাহত রাখতে হবে।’