চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটির জামালখান আসকার দিঘির পাড় এলাকায় পাহাড় কেটে নির্মাণাধীন একটি বহুতল ভবন ভাঙার কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)। সোমবার (২১ এপ্রিল) সকাল ১১টায় চউকের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিমের উপস্থিতিতে এ ভবন ভাঙার কাজ শুরু হয়।
ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান স্বপ্নীল ফ্যামিলি ওনার্সের নামে ৯২টি পরিবারের জন্য তিনটি আলাদা ভবন নির্মাণের কাজ চলছে।
২০২৩ সালের ১৩ এপ্রিল সিডিএর ইমারত নির্মাণ কমিটির কাছ থেকে তিনটি বেজমেন্ট ও ১৪ তলা ভবনের অনুমোদন নেওয়া হয়। তবে পাহাড় না কাটাসহ ৮৭টি শর্ত দিয়েছিল সিডিএ। এসব শর্তের কোনোটিরই তোয়াক্কা করেনি স্বপ্নীল ফ্যামিলি ওনার্স।
চউকের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আসকার দিঘির পাড় এলাকায় পাহাড় কেটে ভবন নির্মাণ করছে স্বপ্নীল ফ্যামিলি ওনার্স নামের ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান। পাহাড় কেটে পরিবেশের ক্ষতি করায় সিডিএ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়। কিন্তু তারা এ নির্দেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসে। গতকাল (রবিবার) তাদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। তাই আজ অভিযানে এসেছি। ভবন ভাঙার কাজ চলছে।’
মো. নুরুল করিম বলেন, ‘নগর পরিকল্পনার বাইরে গড়ে ওঠা যে কোনও অবৈধ স্থাপনা, বিশেষ করে পাহাড় কেটে নির্মিত ভবন শহরের পরিবেশ ও নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি। বর্ষায় এসব এলাকায় ভূমিধস ও প্রাণহানির ঝুঁকি থাকে। তাই এসব স্থাপনার বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি।’
এ প্রসঙ্গে চউকের আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জিয়া হাবীব আহ্সান বলেন, ‘পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে। সাধারণ জনগণকে অনুরোধ করছি, দৃশ্যমান পাহাড় কেটে বা অনুমোদনবিহীন স্থাপনায় কোনও ফ্ল্যাট বা জমি যেন ক্রয় না করেন। এতে তারা শুধু নিজেদের ঝুঁকিতে ফেলছেন না, বরং আইনগত জটিল পরিস্থিতি ও ক্ষতির মুখোমুখি হতে পারেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাহাড় কাটা একটি ফৌজদারি অপরাধ। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫’-এর ধারা ৬ (খ) অনুযায়ী, পাহাড় কাটাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং এর জন্য জরিমানা ও কারাদণ্ড উভয় দণ্ডই প্রযোজ্য হতে পারে। তা ছাড়া, বাংলাদেশ দণ্ডবিধি ১৮৬০’-এর ধারা ২৬৮ অনুযায়ী, জনসাধারণের জন্য ক্ষতিকর পরিবেশ সৃষ্টিকেও অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।’