নীরব চৌধুরী বিটন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :
খাগড়াছড়ি শহরে থেকে তের কিলোমিটার দূরে ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের বাজারের পূর্ব দিকে ৭নং ওয়ার্ডের ২নং প্রকল্প গ্রাম বানছড়া এলাকা। এলাকায় টিলার মধ্যে দুই একক জায়গায় বিদেশী নতুন জাতের তরমুজ চাষ হচ্ছে। নাম তার ব্যাল্ক জ্যম ও পাখিজা। দুই জাতের আগাম বিদেশী তরমুজ দেখতে দুর-দুরান্ত থেকে মানুষ আসছেন। শীতে এই দুই জাতের তরমুজ চাষ করে সফল হচ্ছে চাষিরা । বাজারে নতুন ফল বিক্রি হচ্ছে, দাম পাচ্ছে ভালো ।
আজ সকালে তরমুজ খেতে গিয়ে দেখা যায় । শীতের সকালবেলা ব্যাল্ক জ্যম ও পাখিজা দুই জাতের তরমুজের গাঁয়ে ও পাতায় শিশিরবিন্দু লেগে আছে। যেন বরফের দেশে তরমুজ চাষ। টিলার মধ্যে দুই জাতের তরমুজের ফলন হয়েছে চোখ জুড়ানো। যে দিকে চোখ যায় তরমুজ আর তরমুজ। পাহাড়ে নতুন সম্ভাবনাময় এই দুই জাতের তরমুজ।
তরমুজ চাষি সুজন চাকমা বলেন, পাঁচ জায়গাতে আমের চারা রোপন করার পর চিন্তা করলাম খালি পরে রয়েছে। সিদ্ধান্ত নিলাম তরমুজ লাগাব। বিদেশী জাতের পাখিজা ও ব্যাল্ক জ্যম দুই জাতের তরমুজ লাগিয়েছি। এর মধ্যে ভালো ফলন হয়েছে। দেখে আমি অবাক হয়েছি। তিনি বলেন, আশ্বিন মাসের এক তারিখে লাগিয়েছি। অগ্রায়ণ মাসে ফল পরিপক্ক হয়েছে। বিক্রি শুরু করেছি। দুই একক জায়গায় চারা লাগিয়েছি। চৌদ্ধশ গর্ত আছে। সাত হাজারের বেশি তরজুম পাব বলে আশা করি। কেজি ৬০ দরে বিক্রি করি। ছয় থেকে সাত লাখ টাকা পাব।
চাষি জানান, ফলন দেখে খুব খুশি। তাই সামনে বার এককর তরমুজ চাষ করার পরিকল্পনা আছে। পাখিজা সাত থেকে আট কেজি ও ব্যাল্ক জ্যম তরমুজ তিন কেজি পর্যন্ত ওজনের হচ্ছে। তিনি বলনে, বেকার যুবকদের এই বিদেশী জাতের চাষ করে সফল হবে। কৃষি সম্প্রাসারণের বিভাগ প্রশিক্ষণ দিলে এই মৌষুমের তরমুজ চাষের আগ্রহ দেখাবে। তিনি আরো বলেন, এই পর্যন্ত তিন জন ব্যবসায়ি খেত দেখে এসেছে। ব্যবসায়ি দরদাম করছেন। জেলা থেকে অনেকে ফোন কওে খোঁজ খবর নিচ্ছে। ভালো দাম পেলে বিক্রি করব।
খাগড়াছড়ির কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ের সুত্রে জানা যায়, পনের থেকে বিশ মেঃটন তরমুজ আবাদ হয়েছে।
খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বর এলাকায় তরমুজ বিক্রি করছেন। তরজুম ব্যবসায়ি তপন বলেন, শীতেও বাজারে ব্যাল্ক জ্যম জাতের তরমুজের চাহিদা ভালো। প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি করছি। ভালো বিক্রি হচ্ছে।
খেজুরবাগান হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-সহকারী র্কমর্কতা সুজন চাকমা বলনে, নতুন নতুন জাত গুলো পাহাড়ে সম্ভাবনা । আগাম জাতরে তরমুজ চাষ করে কৃষকরা লাভবান হব ।
উপজলো কৃষি র্কমর্কতা কৃষবিদি মুক্তা চাকমা বলনে, পাহাড়ে খাগড়াছড়ি সদর উপজলোয় হেক্টর জুড়ে তরমুজ চাষ হচ্ছে । আগাম চাষ নিযে যেন চাষাবাদ করতে পারি এবং কৃষকরা আরো অর্থনৈতিক ভালোবান হয় সেই খেত্রে আমরা আগাম তরমুজ চাষ করতে উসাহতি করি । বাণিজ্যিক করণে ক্ষেত্রে ব্যাপককতা আছে এবং এখান থেকে ব্যাপকহারে আমরা বাজারজাত ক্ষেত্রে কৃষকরা লাভবান হতে পারবে । তিনি বলেন, পাহাড়ের আবহাওয়া এবং জলবায়ু তরমুজ চাষরে উপযোগি । তিনি আরো বলেন, আমাদের পাহাড়ি অঞ্চলে তরমুজ থেকে শুরু করে আমার যতগুলো আগামজাত হচ্ছে কৃষি বিভাগ আমরা কৃষকদের আমার উৎসায়তি করছি । আমরা চাচ্ছি পাহাড়ি অঞ্চলে ফল আবাদ বৃদ্ধি করতে ।
খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবষেণাকেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুন্সী রাশীদ আহমেদ বলেন, উনি খুবই উদ্যোগি ও র্আদশ কৃষক আমাদের খাগড়াছড়ততে অনুসরণীয় । নতুন তরমুজরে চাষ করে তিনি খুবই আশাবাদ । ত্রিশ – পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা খরচ করেছেন । আশি দিনের সময় মধ্যে পাঁচ – সাত লাখ টাকা পাবেন তরমুজ খেত থেকে । ওনার অন্য চার একক জমিতে খালি হচ্ছে ফসল কেটে সেখানে আবার তরমুজ খেত করবেন । তরমুজ চাষে আশপোশে আগ্রহ দেখাবে । তিনি বলেন, আমাদের পার্বত্য অঞ্চলের জমিগুলো তরমুজ চাষের জন্য বেশ উপযোগি । উচু উঁচু জমিতে পানি দাঁড়ানোর সম্ভাবনা কম থাকে ফলে তরমুজ চাষটা এখানে খুবই উপযোগি উনি আমাদরে বাংলাদেশে বাণিজ্যিক কৃষিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ।