পটিয়া প্রতিনিধি- নয়ন শর্মা :
চতুর্থ ধাপ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ঘোষনার একদিন পর জ্বলে উঠলো বিদ্রোহের আগুন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন নৌকা প্রতীককে জয়ী করতে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন, তখন পটিয়ার কয়েকটি ইউনিয়নে বিদ্রোহ পেয়েছে প্রকাশ্য রুপ।
উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে বর্তমান চেয়ারম্যান ইব্রাহীম বাচ্চুকে। কিন্তু বুধ বার( ২৪ নভেম্বর) দুপুরে বাচ্চুর বিরোধীতা করে কুসুমপুরা ইউনিয়নের শান্তির হাট এলাকায় চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের উপর টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুর রশীদ চৌধুরী এজাজের অনুসারীরা।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কুসুমপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাধাই চন্দ্র নাথ, ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক আবুল কাসেম, যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম, কোরবান আলী , উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল নোমান প্রমুখ।
কুসুমপুরা ইউনিয়ন থেকে এবার নৌকা প্রতীক চেয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন এজাজ। ২০১৬ সালের ইউনিয়ন নির্বাচনে নৌকা চেয়ে না পেয়ে হয়েছিলেন বিদ্রোহী প্রার্থী। তবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন থেকে সরে এসেছিলেন।
এবারও আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন তিনি। তবে দল শেষ পর্যন্ত ভরসা রেখেছেন ইব্রাহীম বাচ্চুর উপর।
বিক্ষোভ সমাবেশের বিষয়ে ইব্রাহীম বাচ্চুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, যোগ্য যে কেউ মনোনয়ন চাইতে পারে। তবে দল তো সবাইকে মনোনয়ন দিতে পারে না। গত পাচঁ বছর আমি এলাকায় সরকারের উন্নয়ন সুষম ভাবে করেছি। চেষ্টা করেছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর সন্মান ধরে রাখতে। দল আমাকে আবারো যোগ্য বিবেচনা করে মনোনয়ন দিয়েছে, যারা বিরোধীতা করছে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে তাদের সাথে বসব।”
এদিকে উপজেলার কোলাগাঁও ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে আবারো নাম এসেছে বর্তমান চেয়ারম্যান আহমদ নূরের। সেখানে প্রকাশ্য কোন বিক্ষোভ না হলেও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে পটিয়া উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি শামসুল আলম কয়েকটি ছবি পোস্ট করে তাতে লেখেন , তিনি নাগরিক কমিটির ব্যানারে চেয়ারম্যান নির্বাচন করবেন। ছবিতে দেখা যায় ঘরোয়া একটি বৈঠকে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু জাফর, সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম তুষার, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মাহবুবুল হক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক বুলুবুল হোসেন সহ বেশ কিছু নেতৃবৃন্দ উপস্থিত রয়েছেন।
এবিষয়ে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আহমদ নূরের সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী , হুইপ সামশুল হক চৌধুরী , উপজেলা আওয়ামী লীগ, জেলা আওয়ামী লীগ গত বারের ন্যায় এবারও আমার উপর আস্তা রেখেছেন। আমি বিগত ৫ বছরে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড গুলো সঠিক ভাবে পরিচালনা করার পাশাপাশি কোন অন্যায়কারীকে প্রশ্রয় দিই নাই।”
নাগরিক কমিটির ব্যানারে শামসুল আলমের নির্বাচন করার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শামসুল আলম গতবার বিএনপি’র প্রার্থী ছিলেন। আমি নৌকা প্রতীক নিয়ে উনাকে হারিয়েছি। এখন তিনি নৌকার জয় ছিনিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে প্রথমে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশ করেছে , এখন স্থানীয় নেতাদের বিভ্রান্ত করে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন মাননীয় হুইপ এবং প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়ন করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
পটিয়া উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নে এখনো পর্যন্ত প্রকাশ্য কোন বিরোধ দেখা না গেলেও সচেতন মানুষজন মনে করছেন কুসুমপুরা এবং কোলাগাঁওয়ের মত অর্ন্তকোন্দলের পথে হাঁটতে পারে আরো কয়েকটি ইউনিয়ন।
















