চলমান লকডাউনে কর্মহীন, দরিদ্র- অসহায় শ্রমিকদের ত্রাণ ও নামমাত্র মূল্যে রেশন বিতরণের দাবি জানিয়েছেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম’র যুগ্ম বিভাগীয় সম্পাদক ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি মোঃ এমরান চৌধুরী।
আজ রবিবার (১ আগষ্ট) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম’র যুগ্ম বিভাগীয় সম্পাদক ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি মোঃ এমরান চৌধুরী এই দাবি জানান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামে ত্রাণ তৎপরতা নেই বললেই চলে। অথচ গত বছর এমন পরিস্থিতিতে সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ দেওয়া নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল।
নগদ অর্থ থেকে শুরু করে চাল, ডাল, তেল, চিনি, পেঁয়াজসহ যাবতীয় নিত্যপ্রয়োজনীয় ও ভোগ্যপণ্য পৌঁছে গিয়েছিল হতদরিদ্র, গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে। জনপ্রতিনিধি, শিল্পপতি ব্যবসায়ী ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন আয় হারানো মানুষের ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দেয়।
জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনও ত্রাণ নিয়ে হাজির হয়েছিলেন অসহায় মানুষের দ্বারে দ্বারে। এ কারণে গতবছর লকডাউন থাকার পরও মানুষের দুঃখ-কষ্ট খুব একটা আঁচ করা যায়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ত্রাণ সহায়তার চিত্র প্রতিদিন উঠে আসে। কিন্তু এবার চিত্রটা একেবারেই ভিন্ন। এবার ত্রাণ বিতরণের সেরকম কেন চিত্র দেখা যাচ্ছেনা।
তিনি জানান, চলমান লকডাউনে চট্টগ্রামে হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের করুণ অবস্থা। লকডাউনে তারা কাজ হারিয়েছে। আয়-রোজগার বলতে কিছু নেই। চরম কষ্টে তারা দিন কাটাচ্ছেন। কিন্তু সরকারি-বেসরকারিভাবে কোনো ত্রাণ সহায়তা তারা পাচ্ছেন না। এদিকে লকডাউনের মেয়াদ শুধু বাড়ানো হচ্ছে। এ অবস্থায় আয়-রোজগার হারানো হাজার হাজার মানুষ চোখে শুধু অন্ধকার দেখছেন।
তিনি আরো জানান, দৈনিক লেবার বা শ্রমিকরা লোড-আনলোডিংয়ের কাজ করে দিনে ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতেন। লকডাউনে এখানে আগের মতো ঢুকছে না পণ্যের ট্রাক। মোকাম থেকে আসছে না ক্রেতা। এ কারণে শ্রমিকরা প্রায় অলস বসে আছেন।
লকডাউনে দোকান বন্ধ থাকায় তাদের ব্যবসাও হয়নি। তাই কর্মচারীও নেই। গত ঈদে ব্যবসা না হওয়ায় ব্যবসায়ী বা দোকান মালিকরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তেমনি দোকান-কর্মচারীরাও অর্থকষ্ট পড়ছেন। ক্ষুদ্র দোকান মালিক ও কর্মচারীরা বিধিনিষেধ ও লকডাউনে চরম অর্থকষ্টে পড়েছেন। দোকান কর্মচারীদের ভাগ্যে কোনো ধরনের ত্রাণ সহায়তাও জুটছে না। এই অবস্থা চলতে থাকলে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।
তিনি জানান, লকডাউনে চাকরি, কাজ ও ব্যবসা হারিয়ে নিদারুণ কষ্টে দিন যাপন করছে পরিবহণ শ্রমিক, হোটেল-রেস্তোরাঁ শ্রমিক, ডেইলি লেবার, কুলি-মজুর, সেলুন কর্মচারী, দোকান-কর্মচারী, ফুটপাতের ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক, বেসরকারি ক্ষুদ্র কোম্পানির চাকরিজীবী, কলকারখানার ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। এসব মানুষের সঙ্গে কথা বলে ও খোঁজখবর নিয়ে অসহায়ত্বের নানা চিত্র পাওয়া গেছে।
তিনি জানান, বছরব্যাপী করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘ সময় লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকার পর, সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালুর দাবী জানাচ্ছি নতুবা অসহায় পরিবহন-শ্রমিকেরা আজ অনেকেই অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে।
এহেন পরিস্থিতিতে অসহায় পরিবহন শ্রমিকদের জীবন বাচাঁতে তাদের মানবিক ত্রাণ সহায়তা ও নামমাত্র মূল্যে রেশন প্রদানের দাবী জানিয়েছেন এনডিএম নেতা মোঃ এমরান চৌধুরী।
একই সঙ্গে দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের অসহায় শ্রমিকদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি মোঃ এমরান চৌধুরী।
















