চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটির বৃহত্তর পাইকারি বাজার রিয়াজউদ্দিন বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিন দোকান কর্মচারীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো দুইজন।তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। শুক্রবার (২৮ জুন) ভোর পাঁচটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাদের লাশ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেন।
রিয়াজুদ্দিন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির নেতা মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আগুন লাগার পর ঘুমন্ত কয়েকজন কর্মচারী মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে আটকা পড়েন। তাদের মধ্যে তিনজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আগুন লাগার পর তারা বের হতে না পেরে আগুনের ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আরো মারা যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। উদ্ধার করা তিনজনের নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি। তাদের লাশ চমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
জানা গেছে, কয়েক ঘণ্টাব্যাপী আগুনে বেশ কিছু ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এর পূর্বে, বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বাজারের তামাকুমণ্ডি লেনের রেজওয়ান কমপ্লেক্স ও মোহাম্মদী প্লাজা নামে দুইটি মার্কেটে আগুন লাগে। সংবাদ পেয়ে সিটির আগ্রবাদ, নন্দন কানন, চন্দনপুরা, লামার বাজারসহ বিভিন্ন স্টেশন থেকে ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট গিয়ে কয়েকঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। মার্কেটের সিঁড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় মার্কেটের মধ্যেই আটকা পড়ে বহু দোকানের কর্মচারী। পরে ফায়ার সার্ভিস তাদের উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে তিনজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, রেজওয়ান কমপ্লেক্স মার্কেটটি আট তলা বিশিষ্ট। সেখানে মোবাইলের যন্ত্রাংশসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস পণ্যের দোকান রয়েছে। রেজওয়ান কমপ্লেক্সের ব্রাদার্স টেলিকম নামে একটি দোকান থেকেই আগুনের সূত্রপাত। এরপর ওই দোকান থেকে পাশের মার্কেটেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রামের উপসহকারী পরিচালক আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘রাত একটা ৪০ মিনিটের দিকে আমতল এলাকার বাহার লেনে রেজওয়ান কমপ্লেক্স নামের একটি মার্কেটে আগুন লাগার সংবাদ পাই। ঘটনাস্থলে আগ্রাবাদ, নন্দনকানন ও চন্দনপুরা স্টেশনের ছয়টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। রাত সাড়ে তিনটার পর আরো তিনটি ইউনিট যুক্ত করে মোট নয়টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘মার্কেটে কয়েকজন আটকা পড়েছে তাদের মধ্যে তিনজন মারা গেছেন। কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রচণ্ড ধোঁয়ার কারণে সরু রাস্তা দিয়ে ভেতরে ঢুকা যাচ্ছে না। তাই, আগুন নির্বাপনে বেগ পেতে হচ্ছে।’
এ দিকে, সর্বশেষ শুক্রবার (২৮ জুন) ভোর পাঁভটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়। তারা জানায়, তদন্ত সাপেক্ষে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পরে জানানো হবে।