চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে যে সব ছাত্রলীগ নেতা নিজের জীবনকে বাঁজি রেখে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে শরিক হয়ে দেশ, দল, জাতিকে পুনরুদ্ধারে অবদান রেখে গেছেন, তারাই আমাদের আদর্শিক চেতনার ভিত্তির সোপান।’
মঙ্গলবার (২১ মে) বিকালে ওমরগণি এমইএস কলেজে ছাত্র সংসদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত ভিপি হাসানুল করিম মানিকের ৩৪তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সভায় রেজাউল করিম আরো বলেন, ‘১৯৭৫ পরবর্তী বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ স্পৃহায় প্রতিরোধ যুদ্ধে পুরোভাগে ছিলেন তরুণ ও যুবকরা। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের বহু নিবেদিত প্রাণকর্মী যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের নামগুলো বিস্মৃত প্রায় হলেও তারাই আমাদের অস্তিত্বের অহংকার। স্বৈরাচার বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এদের অবদানের কথা এখনো স্মৃতির পাতায় জ্বলজ্বল করে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতা হাসানুল করিম মানিকের মত আরো বহু শহীদ ছাত্রনেতার মুখগুলো এখনো চোখের সামনে ভেসে ওঠলে আঁতকে ওঠি। আমরা কোথায় ছিলাম আর এখন কোথায় আছি। এখন যেখানে আছি সেই অবস্থানটা তৈরি হয়েছে শহীদ ছাত্রলীগের নেতাদের আত্মত্যাগ ও আত্ম বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। তাদের এ আত্ম বিসর্জনের কথা ইতহিাসের পাতায় অবশ্যই স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’
রেজাউল করিম আরো বলেন, ‘স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে এমইএস কলেজ ছিল ছাত্রলীগের একটি প্রতিবাদী দুর্গ। এ দুর্গের উপর বার বার হামলা এসেছে। বর্বরোচিত হামলায় শহীদ হয়েছেন রবিউল হাসান বেলাল, চন্দন ভোমিক, মইনুল করিম, মহিম উদ্দিন, কাসেম, কায়সার, এনাম, মনসুর, শহীদ, পুলক, রাসেল, বাপ্পিদের মত প্রথম সারির সাহসী ছাত্রলীগ নেতাগণ। ঐ সময়ের হামলা ও মামলায় নির্যাতিত, নিপীড়িত বহু ছাত্রনেতা এখনো বেঁচে আছেন। তাদের যথার্থ মূল্যায়ন অবশ্যই হওয়া উচিত। যদি না হয় তাহলে আমরা বিবেকের কাছে দায় থাকব।’
শহীদ ছাত্রনেতা হাসানুল করিম মানিক স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের সভাপতিত্বে ও সাবেক ছাত্রনেতা এএম কুতুব উদ্দিন চৌধুরী ও পংকজ রায়ের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।
ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল বলেন, ‘আমি খুব কাছ থেকে শহীদ ছাত্রলীগ নেতা হাসানুল করিম মানিককে দেখেছি। এ দুঃসাহসী ছাত্রলীগ নেতা আমার প্রতিবেশী ছিল। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে কোন কঠিন চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলার হিম্মত রাখত। মৃত্যু তার কাছে ছিল অতি তুচ্ছ। মানিক আমাদের কাছে ত্যাগ ও আত্ম বিসর্জনের একজন ধ্রুবতারা।’
মফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রয়াত জননেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নির্দেশনায় আমরা রাজপথ কাঁপানো কর্মী ছিলাম। এ সাহসী কর্মীদের মধ্যে অন্যতম হাসানুল করিম মানিক। মানিকের মত যারা রাজপথে সক্রিয় ছিল, তারা কখনো কিছু পাওয়ার জন্য রাজনীতি করেনি। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যে বাংলাদেশ পাকিস্তানী ভাবধারায় পরিচালিত হচ্ছিল, সেই কালো অধ্যায় থেকে মুক্তি পেয়ে আলোকোজ্জ্বলে ফিরে আসুক। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ আলোর পথের অভিযাত্রী। এ অভিযাত্রায় হাসানুল করিম মানিকসহ আরো সে সব ছাত্রলীগ নেতা শহীদ হয়েছেন, তারা আমাদের অবশ্যই ভয় ও কঠিনকে জয় করার শক্তি যোগাবে।’
সভায় বক্তব্য দেন এমইএস কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মো. ইউনুছ, সাবেক জিএস কেবিএম শাহজাহান, এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের নেতা জসিম উদ্দিন খন্দকার, কোতোয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মশিউর রহমান রোকন, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এমআর আজিম, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবু, মহানগর যুবলীগের সহ-সভাপতি নুরুল আনোয়ার, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মনোয়ার জাহান মনি, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য শিবু প্রসাদ চৌধুরী, মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সামদানি জনি, ছাত্রলীগ নেতা মনিরুল ইসলাম, সৌরভ রায়, জুবাইদুল আলম আশিক, জাহিদ হাসান সাইমুন, আবদুল্লাহ আল সাইমুন, অর্ণব দে, হাবিবুর রহমান সুজন, এইচএম জাহিদ, মোছা. তুস্মি।
উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মুহিব উল্লাহ, আবু হানিফ, নাজমুল আহসান, পিংকু দেব রায়, ইকবাল করিম সোহান, খায়নাত মোরশেদ কনক, মো. জসিম উদ্দিন, বিপ্লব মিত্র, রাজীব দত্ত রিংকু, আসিবুর রহমান মুন্না, খোকন চন্দ্র তাঁতী, নুরুল আলম মিয়া, জসিম উদ্দিন, নুর উদ্দিন বাহার বাবু, ফজলুল কবির সোহেল, ইকবাল আহমদ ইমু, সৌরভ বিকাশ বড়ুয়া বিতান, মোরশেদ আলম, তসলিম আলম, কাজী দেলোয়ার হোসেন, যুব মহিলা লীগ নেত্রী সোনিয়া আজাদ, মো. ইফতু, মো. মাসুদ, মো. জাহেদ, আলী রেজা পিন্টু, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. দেলোয়ার, মো. জহির উদ্দিন, জয় শংকর, মো. হাবিব, শ্রমিক নেতা তোফাজ্জল হোসেন জিকু, সামির সাকিব চৌধুরী, কামরুল হুদা পাবেল, সাব্বির সাকিব, শুভ দত্ত।