চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটিতে বসবাসকারী নিজের নির্বাচনী এলাকা ও জন্মভুমি রাঙ্গুনিয়াবাসীর সঙ্গে ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় সম্প্রীতির বন্ধনে রাঙ্গুনিয়া বহু এগিয়ে। আমাদের এলাকায় মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, চাকমা, মারমা, খ্রিস্টান সব জাতি গোষ্ঠির সহাবস্থান। পুরো বাংলাদেশে খ্রিস্টানদের জন্য দুইটা কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য আলাদা সন্ধ্যাকালীন হল রয়েছে, তার মধ্যে একটি আমাদের রাঙ্গুনিয়ায়। সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ একটি জনপদ রাঙ্গুনিয়া।
শনিবার (২০ এপ্রিল) রাতে চট্টগ্রাম সিটিতে বসবাসকারী রাঙ্গুনিয়াবাসীর ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সিটির সিরাজুদৌল্লাহ রোডের ওয়াইএনটি কনভেনশন সেন্টারে মিলন মেলা ও গুণিজনদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রাঙ্গুনিয়া সমিতি-চট্টগ্রাম।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি পরিবেশ বিজ্ঞানের ছাত্র। মানুষের মনন তৈরিতে পরিবেশের একটি বিরাট ভূমিকা থাকে। আপনারা দেখবেন, এলিট রিজিয়নের মানুষ একটু মেজাজি হয়, আবার শীত প্রধান দেশের মানুষ একটু শান্ত হয়, আর যেখানে সবুজ প্রকৃতি দিয়ে ঘেরা ওই এলাকার মানুষ শান্ত প্রকৃতির হয়। রাঙ্গুনিয়ার চারিদিকে পাহাড়, পর্বত ও নদী দিয়ে ঘেরা। তাই, রাঙ্গুনিয়ার মানুষ একটু শান্ত প্রকৃতির। এখানেও যে অন্য প্রকৃতির মানুষ নেই, তা আমি বলব না। তবে, রাঙ্গুনিয়ার মানুষ অন্যান্য উপজেলার মানুষের থেকে শান্তিপ্রিয় ও অতিথি পরায়ন।’
চট্টগ্রামস্থ রাঙ্গুনিয়া সমিতি অন্যান্য উপজেলার সমিতি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ও কার্যকর সমিতি উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিষ্ঠালগ্নে যারা এ সমিতি গঠন করেছিল ও এখন এটির সঙ্গে যারা যুক্ত, সবাইকে আমি সাধুবাদ জানাই। রাঙ্গুনিয়ায় বহু গুণি মানুষ তৈরি হয়েছে, সেটা ঢাকা বলেন, চট্টগ্রামে বলেন। রাঙ্গুনিয়ায় বহু উন্নয়ন হয়েছে, যা আমরা এখন দেখতে দেখতে খেয়াল করতে পারছি না। যে ছেলেটি ১৫ বছর পূর্বে দেশের বাইরে গেছে, সে এখন রাঙ্গুনিয়া আসলে বুঝতে পারে না যে, এইটা তার জন্মভুমি রাঙ্গুনিয়া।’
তিনি বলেন, ‘কাপ্তাই সড়ক দুই দিকে আরো ১৬ ফুট প্রশস্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং এখানে যাতে পরিবেশের ক্ষতি না হয়, সে জিনিসটিও খেয়াল রাখা হচ্ছে। আমি রাঙ্গুনিয়ার হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি ও আমার কাছে যে গিয়েছে কাউকে ফেরত দিইনি। গেল ১৫টি বছর রাঙ্গুনিয়ার মানুষ আমাকে যে নিঃস্বার্থভাবে সমর্থন দিয়েছেন, সেজন্য আমি আপনাদের নিকট কৃতজ্ঞ। এর প্রতিদান দেয়ার ক্ষমতা আমার কাছে নেই।’
রাঙ্গুনিয়া সমিতি চট্টগ্রামের সভাপতি খালেদ মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়েটের ভিসি রফিকুল আলম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রো ভিসি সেকান্দর চৌধুরী, চবির পালি ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক জিন বোধি ভিক্ষু, মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন তালুকদার, কামরুন নাহার বেগম, আবুধাবী বঙ্গবন্ধু পরিষদের কমিটির সভাপতি ইফতেখার হোসেন বাবুল, রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মেয়র শাহজাহান সিকদার, ব্যবসায়ী আবদুর রাজ্জাক, এটিএম রেজাউল করিম, মো সেলিম, সেকান্দর চৌধুরী, আবদুল জব্বার, নিখিল নাথ ও ফারুখ হোসেন তালুকদার।