চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটিতে যত্রতত্র পার্কিং বন্ধ করতে পে-পার্কিং ব্যবস্থা চালু করতে চায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। যার ফলে সড়কের নির্দিষ্ট জায়গায় অর্থের বিনিময়ে যানবাহন রাখা যাবে। তবে, লক্ষ লক্ষ যানবাহনের ভীড়ে ব্যস্ত সিটি চট্টগ্রামে পে-পার্কিং ব্যবস্থা যানজট নিয়ন্ত্রণে কতটুকু সফল হবে, তা নিয়ে সন্দিহান ট্রাফিক বিভাগ। এ পদ্ধতি চালু করার পূর্বে বিস্তারিত গবেষণা করা দরকার বলে মনে করেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।
গেল ৩০ জানুয়ারি চসিকের মাসিক সাধারণ সভায় মেয়র রেজাউল করিম বলেছিলেন, ‘সিটির ফুটপাত দখল জনগণের জন্য অসহনীয় হয়ে গেছে। মানুষ স্বস্তিতে হাটতে পারবে না, মুক্ত বাতাসে নিশ্বাস নিতে পারবে না, তা হতে পারে না। আমরা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার সাথে সভা করেছি। দখল হওয়া ফুটপাত উদ্ধারে ব্যাপক অভিযান চালানোর পাশাপাশি পে-পার্কিং চালুসহ বহুমুখী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষের সিটি চট্টগ্রামে প্রতিদিনই বাড়ছে যানবাহনের চাপ। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) হিসেব মতে, চট্টগ্রাম সিটিতে প্রতিদিন নয়া করে নিবন্ধিত হচ্ছে শতাধিক যানবাহন। আর চলাচল করছে অন্তত ১৩ হাজার সিএনজি অটোরিক্সা, ৪০ হাজার গাড়ি ও সাড়ে তিন হাজার গণপরিবহন ও কয়েক লক্ষ রিক্সা। কিন্তু, সে তুলনায় নেই পর্যাপ্ত পার্কিং সুবিধা। ফলে, সড়কের উভয়পাশে যত্রতত্র গাড়ি রাখা হচ্ছে। প্রায় সময় লেগে থাকে অসহনীয় যানজট। এতে নষ্ট হয় মূল্যবান কর্ম ঘণ্টা।
তাই, বন্দরসিটির প্রধান সড়কগুলোতে যত্রতত্র পার্কিং ঠেকাতে ‘পে-পার্কিং’ চালুর পদক্ষেপ নিতে চায় চসিক। এ ব্যবস্থা চালু হলে সড়কের পাশে নির্দিষ্ট স্থানে অর্থের বিনিময়ে গাড়ি রাখা যাবে। তবে, নির্দিষ্ট স্থানের বাইরে করা যাবে না পার্কিং। এর মধ্য দিয়ে যত্রতত্র গাড়ি রাখার নৈরাজ্য কমবে, সেইসঙ্গে সিটিতে যানজটও কমে আসবে বলে মনে করেন চসিকের মেয়র।
তবে, পে-পার্কিং ব্যবস্থা চালুর পূর্বে সিটির কোথায় কোথায় পার্কিং সুবিধা চালু করা সম্ভব, কিভাবে আদায় করা হবে পার্কিং ফি, এ ব্যাপারে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পরামর্শ দিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার জয়নুল আবেদীন।
এ দিকে, শুধুমাত্র রাস্তায় পে-পার্কিং ব্যবস্থা চালু না করে, উন্নত দেশের মত বহুতল পার্কিং ব্যবস্থা চালুর পরামর্শ দিয়েছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে পার্কিংয়ের নিজস্ব ব্যবস্থা রাখার উপরও গুরুত্ব দিয়েছেন তারা।
সিটির শপিংমল, হাসপাতাল, বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবনগুলোতে বিল্ডিং কোড মেনে পর্যাপ্ত পার্কিং স্পেস রাখতে বাধ্য করতে না পারলে পে-পার্কিং ব্যবস্থা সুফল বয়ে আনবে না বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।