চট্টগ্রাম: অর্ধশতক পূর্তির উচ্ছ্বাসে জমকালো আয়োজনে শুরু হয়েছে গণায়ন নাট্য উৎসব ২০২৫।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে উৎসবের উদ্বোধন হয়।
গণায়ন নাট্য সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠালগ্নের ছয় সারথির উপস্থিতিতে উদ্বোধনী পর্বে স্মৃতিচারণায় ছড়িয়ে পড়ে নস্টালজিয়ার আবহ।
‘নাটকের শিল্পিত চেতনায় জীবন সত্য প্রকাশে প্রত্যয়ী আমরা’— এই স্লোগান নিয়ে ১৯৭৫ সালে পথচলা শুরু করে গণায়ন নাট্য সম্প্রদায়। সৃজন ও সংগ্রামের দীর্ঘ অভিযাত্রায় ৫০ বছর পূর্ণ করায় এই নাট্য উৎসবের আয়োজন করেছে সংগঠনটি।
উৎসব চলবে ১০-১৬ অক্টোবর পর্যন্ত। প্রতিদিন সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে বিভিন্ন নাটক। উৎসবে প্রদর্শিত হবে— গণায়ন নাট্য সম্প্রদায়ের ‘জুলিয়াস সিজার’,
নান্দীমুখের ‘আমার আমি’, গণায়ন নাট্য সম্প্রদায়ের পরিবেশিত ‘কমলা সুন্দরীর কিসসা’, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নাট্যকলা বিভাগের ‘তিনি আসছেন’, কথাসুন্দর পরিবেশিত ‘বৃত্তের বাইরে’, ফেইম স্কুল অব ডান্স, ড্রামা অ্যান্ড মিউজিজের নৃত্যনাট্য ‘বাল্মীকি প্রতিভা’।
প্রতিদিনের নাটক প্রদর্শনের আগে মুক্তমঞ্চে থাকছে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
গণায়ন নাট্য সম্প্রদায়ের ৫০ বছরের পথচলায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য দক্ষ অভিনেতা, নির্দেশক ও নাট্যকার। সংগঠনটির সদস্যদের মধ্য থেকে দেশের খ্যাতনামা নাট্য শিক্ষক ও নির্দেশক হিসেবে অসীম দাশ ও কুন্তল বড়ুয়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সুনাম অর্জন করেছেন।
উদ্বোধনী দিনে মঞ্চস্থ হয় শেক্সপিয়রের ধ্রুপদি নাটক ‘জুলিয়াস সিজার’। নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য, শ্রেয়সী স্রোতস্বিনী, লাব্রিচাই মারমা প্রমুখ। জুলিয়াস সিজারের চরিত্রে যীশু দাশ তার দীর্ঘ নাট্যচর্চার অভিজ্ঞতার ছাপ রেখেছেন অনায়াস অভিনয়ে।
সেট ও লাইট ডিজাইন ছিল স্বাভাবিক মানের, যদিও জেলা শিল্পকলা একাডেমির কন্ট্রোল রুমের কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে কয়েকবার ছন্দপতন দেখা যায়। নাটক চলাকালীন প্রবল বৃষ্টিতে দর্শকরা ভিজে গেলেও মিলনায়তন ছিল দর্শকে পরিপূর্ণ।
নাটক শেষে দেখা যায়, শিল্পকলা একাডেমির প্রাঙ্গণ পানিতে নিমজ্জিত।
অর্ধশতাব্দীর এই যাত্রায় গণায়ন নাট্য সম্প্রদায় হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামের নাট্য অঙ্গনের অন্যতম প্রধান শক্তি, যার আলো ছড়িয়েছে দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও।