চট্টগ্রাম: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদকে কৃষিখাত থেকে আলাদা করে সুবিধাবঞ্চিত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের যুগপূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী ‘সিভাসু ফিশ ফেস্টিভ্যাল-২০২৫’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা বলেন, ‘মৎস্য ও প্রাণিসম্পদকে কৃষিখাত থেকে আলাদা করে সুবিধাবঞ্চিত করা হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের বিদ্যুৎবিল বেশি হওয়ায় এই খাতের উদ্যোক্তা ও খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এই খাতের বিদ্যুৎ বিল কমাতে আমরা কাজ করছি।’
সিভাসুর অডিটোরিয়ামে দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত ফেস্টিভ্যালের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিভাসুর উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান এবং সভাপতিত্ব করেন মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. শেখ আহমাদ আল নাহিদ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আতিয়ার রহমান, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. আবদুর রউফ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (সা. দা.) ড. অনুরাধা ভদ্র, কক্সবাজার-৩ আসনের সাবেক সাংসদ ও নিরিবিলি গ্রুপের চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান কাজল এবং এসিআই এগ্রোলিংক লিমিটেডের বিজনেস ডিরেক্টর সৈয়দ এম ইসতিয়াক।
অনুষ্ঠানে ফরিদা আখতার বলেন, ‘মৎস্যখাতে মুখ্য অবদান রাখছেন আমাদের মৎস্যজীবীরা। মৎস্যজীবীরা না থাকলে নদী আর সমুদ্রভর্তি মাছ থাকলেও আমাদের কোন লাভ হতো না।’
সিভাসু কর্তৃপক্ষকে ফিশিং কমিউনিটির সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘ফিশারিজ কমিউনিটির সামাজিক অবস্থা যদি উন্নত করা না যায়, তাহলে নতুন প্রজন্ম এই পেশায় থাকবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘মৎস্যখাতের উন্নয়নে ইন্ডাস্ট্রির ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। এই ইন্ডাস্ট্রিকে আরো সম্প্রসারণ করতে হবে। কারণ সরকার একা অনেক কিছুই করতে পারবে না। আমরা যদি ইন্ডাস্ট্রিকে পাশে পাই, আমাদের মৎস্যজীবীদেরকে যদি আমরা রক্ষা করতে পারি, তাহলে মৎস্যখাতে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে আরো ভালো অবস্থানে থাকতে পারবে।’
মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান বলেন, ‘ফিশারিজ অনুষদের উদ্যোগে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এই উৎসব ছিল খুবই চমৎকার এবং অত্যন্ত সময়োপযোগী। দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ফিশারিজ রিলেটেড এই ধরনের বিশাল আয়োজন এটিই প্রথম।’
তিনি আরও বলেন, ‘দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে অ্যাকাডেমিয়া ও ইন্ড্রাস্ট্রির মধ্যে এই ধরনের কল্যাবরেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
অনুষ্ঠানে দুই দিনের ফিশ ফেস্টিভ্যালের সেরা স্টল, সেরা গবেষণা প্রবন্ধ ও পোস্টার উপস্থাপকদেরকে সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়।
ফরিদা আখতার ফেস্টিভ্যালের স্টল, বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি ও ফিশারিজ মিউজিয়াম পরিদর্শন করেন।
উল্লেখ্য, দুই দিনব্যাপী ফেস্টিভ্যালে ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয়সহ মৎস্য সেক্টরের সাথে জড়িত ৯৫টি প্রতিষ্ঠানের ৫৫০ জন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষক, উদ্যোক্তা, ভোক্তা ও প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান হতে একঝাঁক বিজ্ঞানী ৩৫০টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। বাংলাদেশ শ্রিম্প অ্যান্ড ফিশ ফাউন্ডেশনের (বিএসএফএফ) সহযোগিতায় সিভাসুর মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ এই ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করে।