চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ বলেছেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জীবনবাজি রেখে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম বলেই এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। জীবনে কোন কিছু পাওয়ার আশায় নয়, পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে এ দেশকে মুক্ত করতে পারাই আমাদের জন্য বড় পাওয়া। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিপ্রায় অনুযায়ী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাকে চউকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়ে চট্টগ্রামের সব স্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করেছেন। এ গুরুত্বপূর্ণ পদে যত দিন থাকি বা না থাকি, সরকারের সার্বিক উন্নয়নে আমৃত্যু কাজ করে যাব।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুরে চউকের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা ইউনিট কমান্ডের সঙ্গে আয়োজিত মত বিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় মোহাম্মদ ইউনুছ আরো বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধি করে ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করেছেন, এ ভাতা আরো বাড়বে। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার মুত্যুর পরে মৃতদেহে ফুল ও লাল-সবুজের পতাকা দিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘গার্ড অব অনার’ দিয়ে দাফন করা হয়। এর চেয়ে বড় সম্মান আর কিছুই নেই। সরকারের নির্দেশনায় দেশের সব সরকারী হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বের সঙ্গে চিকিৎসা-সেবা দেয়া হচ্ছে। শেখ হাসিনার সরকার ছাড়া অতীতের আর কোন সরকার এ ধরণের সম্মান ও কল্যাণমূলক কাজগুলো করেননি।’
একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু পরবর্তী তার কবর আলাদা ও নির্দিষ্টভাবে করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন চউকের চেয়ারম্যান।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজফফর আহমদ বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের আবাসন সংকট নিরসনে হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদে চউকের একটি আবাসিক প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার কথা থাকলে তা অদৃশ্য কারণে বন্ধ রয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করা হলে নিম্ন-মধ্যবিত্তরা স্বল্পমূল্যে একটি প্লট পাবে। কিন্তু, এটি বাস্তবায়ন না করে অনন্যা-২ আবাসিক নামে ব্যক্তি মালিকানাধীন আরেকটি কথিত প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য একটি স্বার্থান্বেষী মহল চউকের শরণাপন্ন হচ্ছে।’
তাই, বীর মুক্তিযোদ্ধারাসহ স্বল্প আয়ের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বার্থে অনন্যা-২ আবাসিক নামে কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন না করার দাবি জানান তিনি।
স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর শেখ হাসিনা এ প্রথম একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে চউকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান মোজাফফর।
ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হক চৌধুরী সৈয়দের সঞ্চালনায় সভায় বক্তৃতা করেন সংসদের ভারপ্রাপ্ত জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরওয়ার কামাল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম মহানগর শাখার আহবায়ক সাহেদ মুরাদ সাকু, সদস্য সচিব কাজী মুহাম্মদ রাজীশ ইমরান ও সন্তান কমান্ড জেলা শাখার সদস্য সচিব কামরুল হুদা পাভেল।
সভায় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুর উদ্দিন, সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ উল্লাহ, সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আবদুল গনি, সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফর আহমদ, জেলা সংসদের সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব আলম, যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন, যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর উদ্দিন, কোতোয়ালী থানা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সৌরিন্দ্রনাথ সেন, সদরঘাট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর আলম, চান্দগাঁও কমান্ডার মো. কুতুব উদ্দিন, বাকলিয়া কমান্ডার মো. আলী হোসেন, খুলশী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউছুফ, আকবর শাহ কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম উল্লাহ, পাহাড়তলী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফর আহমদ, হালিশহর কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউনুছ, বন্দর কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কামরুল আলম জতু, ডবলমুরিং সমন্বয়কারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল লতিফ, পটিয়া কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মহিউদ্দিন, লোহাগাড়া যদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা তপন কান্তি দাশ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ নুরুল আলম, শফিউল আলম, সৈয়দ আহমদ, গোলাম নবী, মহীদুল ইসরাম দুলু, শম্ভু দাশ, শ্যামল মিত্র, দুলাল রায়, আশীষ গুপ্ত ও দুলাল দাশ, সাংবাদিক রনজিত কুমার শীল, সন্তান কমান্ডের সদস্য আবু সাঈদ মাহমুদ রণি, রিপন চৌধুরী, জয়নুদ্দিন জয়, মো. রায়হান।
















