নিজস্ব প্রতিবেদক :
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) মধ্যরাতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা। দাবি আদায় না হলে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপিসহ কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
এর আগে রাত সাড়ে দশটায় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভরত সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি বরাবর খোলা চিঠি পাঠ করেছেন আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী। তারা এই চিঠি গণমাধ্যমকর্মীদের কাছেও পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ভবনের সামনে ৩ দফা দাবিতে আন্দোলনরত বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের ছাত্রী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ‘বিনা উস্কানিতে সুপরিকল্পিতভাবে’ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে পুলিশের হামলার অভিযোগ করা হয়।
খোলা চিঠিতে আরও বলা হয়, জনগণের টাকায় কেনা আধুনিক অস্ত্রসজ্জিত পুলিশের নির্বিচার লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডের শিকার হয় নিরস্ত্র শিক্ষার্থীরা।
এতে অন্তত ৪০ জন শিক্ষার্থী, যাদের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ২০ এর বেশি গুরুতর আহত হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
শিক্ষার্থীদের উপর এমন হামলা চালানোর মাধ্যমে উপাচার্য দায়িত্ব পালনের নৈতিক, যৌক্তিক ও সাংবিধানিক যোগ্যতা হারিয়েছেন উল্লেখ করে তাকে অপসারণের আবেদন জানানো হয় চিঠিতে।
চিঠিতে রাষ্ট্রপতির কাছে অভিযোগ করা হয়, “বিশ্ববিদ্যালয়ে গতদিনের হামলার পর আজ [সোমবার] সারাদিন ক্যাম্পাসে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে জলকামান ও রায়টকারসহ পুলিশের উপস্থিতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনিরাপত্তার পরিবেশ তৈরি করেছে।”
তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামান্য আচার্যের কাছে অবিলম্বে ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানান।
এর আগে, সোমবার রাতে শিক্ষার্থীদের সাথে ফোনে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। সমাধানে ব্যবস্থা নিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলার আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
গতকাল থেকে ভিসির পদত্যাগ দাবিতে, হল ত্যাগের নির্দেশনা অমান্য করে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত, বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ করার অভিযোগ তুলে হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার পদত্যাগ দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের চতুর্থ দিন রোববার তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। বিকাল ৫টার দিকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
ওই সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে, কাঁদুনে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় শিক্ষার্থী, কর্মকর্তাসহ অর্ধশত আহত হন।
















