নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামে বলিষ্ঠ নেতৃত্বদানকারী ঐতিহ্যবাহী ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে। এ উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ।
আজ মঙ্গলবার (৪ঠা জানুয়ারি) নগরীর সিআরবি শিরীষতলায় মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরের সঞ্চালনায় ও সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমুর সভাপতিত্বে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ইমরান আহাম্মেদ ইমু বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িক জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ধারণা মাথায় রেখে দেশভাগের পরপরই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, শিক্ষার অধিকার, বাঙালির স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, স্বাধীনতা ও স্বাধিকারের আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, দেশ গঠন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রব্যবস্থা তৈরিতে ছাত্রলীগ ভূমিকা রেখেছে।
দীর্ঘযাত্রায় ছাত্রলীগের চলার পথ কখনোই মসৃণ ছিল না। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হৃদয়ে রেখে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এ সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে ছাত্রলীগ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জীবন দিতে প্রস্তুত। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সঙ্গে ছাত্রলীগ কখনোই আপস করবে না।’
এ সময় সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন কলেজ, থানা ও ওয়ার্ডে আমরা নতুন কমিটি করেছি। বিভিন্ন মহলের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও বাধার পরও সুন্দরভাবে কমিটি গঠন হয়েছে এবং কার্যক্রম চলছে।
নতুন কমিটি হওয়ায় অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় চট্টগ্রাম নগরীতে ছাত্রলীগ এখন অনেক বেশি সক্রিয়। নেতাকর্মীরাও অনেক বেশি চাঙ্গা। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। এর প্রমাণ হচ্ছে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতি। এমন বর্ণাঢ্য আয়োজন নিকটতম সময়ে হয়নি।’
এ সময় ছাত্রলীগ নেতারা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু করেন। পরে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, মহানগর ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি তালেব আলি, নোমান চৌধুরী, নাজমুল হাসান রুমি, রুমেল বড়ুয়া রাহুল, ইয়াছিন আরাফাত কচি, একরামুল হক রাসেল, আ.ফ.ম সাঈফউদ্দিন, মঈনুল হাসান চৌধুরী, শাহিন মোল্লা, ফররুখ আহমেদ পাভেল, নাঈম রনি, আমজাদ হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রনি মির্জা, সুজন বর্মন, সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম মানিক, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কবীর আহমেদ, আবু তারেক রনি প্রমুখ।
এসময় বক্তারা আরও বলেন, বাংলা, বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় ১৯৪৮ সালের এইদিনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জন্ম হয়। সেই জন্মলগ্ন থেকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তার ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৮’র আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ৬ দফার পক্ষে কাজ করে গেছে।
শুধু এখানেই শেষ নয় এরপর ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে কারাগার থেকে মুক্ত করে আনা, ৭০’র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়লাভ এবং ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পরাধীন বাংলায় লাল সবুজের পতাকার বিজয় ছিনিয়ে আনতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে ছাত্রলীগ।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে অংশ নেয় ছাত্রলীগ। ৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অনন্য ভূমিকা পালন করে ছাত্রলীগ।
সমাবেশ শেষে সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু এবং সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরের নেতৃত্বে একটি র্যালির বের করা হয়। র্যালিটি টাইগারপাস, কদমতলী হয়ে আবার শিরীষতলায় এসে শেষ হয়।
সমাবেশে অংশ নেন সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য মিনহাজুল আবেদীন সানি, মিয়া মোহাম্মদ জুলফিকার, ওসমান গনি বাপ্পি, শাহরিয়ার হাসান, লিটন চৌধুরী রিংকু, আশরাফ উদ্দিন টিটু, এম এ হালিম সিকদার মিতু, আবদুল আহাদ, শফিকুল ইসলাম পারভেজ, শরীফুল ইসলাম আদনান, শেখ শরফুদ্দিন সৌরভ, আবু হানিফ রিয়াদ, বোরহান উদ্দিন ফরহাদ, ফয়সাল সাব্বির, পিংকি সাহা, আলবীন নূর নাহিয়ান, সহ-সম্পাদক কাইছার মাহমুদ রাজু, এম হাসান আলি, সাব্বির সাকির, শুভ ঘোষ, শাহজাহান সাজু, কালাচাঁদ ভট্টাচার্য সীমান্ত, কার্যনির্বাহী সদস্য আরাফাত রুবেল, মোশাররফুল হক চৌধুরী পাভেল, মোস্তফা কামাল, সালাহউদ্দিন বাবু, মিজানুর রহমান মিজান, ইকবাল হোসেন নয়ন, শেখর দাশ, ইমরান সাওন, আবুল কালাম আজাদ, মমশাদ হোসেন রাব্বি, ফয়সাল অভি প্রমুখ।
















