নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে নিখোঁজদের সন্ধানে বরগুনা সদর হাসপাতাল মর্গে ভিড় জমিয়েছেন স্বজনরা। এরই মধ্যে লাশ শনাক্তের প্রক্রিয়া শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, ঝালকাঠি জেনারেল হাসপাতাল থেকে মোট ৩৭ জনের মরদেহ বুঝে নেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচজনের মরদেহ ইতোমধ্যে স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। বাকি ৩২টি মরদেহ বরগুনা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। সকাল ১১টা পর্যন্ত এই মরদেহগুলো বরগুনা সদর হাসপতালের মর্গে রাখা হবে। সকাল ১০টার মধ্যে কেউ শনাক্ত করতে পারলে তাকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
তিনি বলেন, বরগুনা সদর হাসপাতালে সংরক্ষণের জন্য অত্যাধুনিক ব্যবস্থা না থাকায় ১১টার পর বাকি মরদেহ সার্কিট হাউজ মাঠে সম্মিলিত জানাজা শেষে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী ১২টার মধ্যে সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের পোটকাখালী এলাকায় গণদাফন করা হবে।
হাবিবুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে। প্রত্যেকটি মরদেহের ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, হাসপতালের মর্গে রাখা ৩২টির মধ্যে আরো ছয়- সাতটি মরদেহ শনাক্ত সম্ভব হতে পারে। চিকিৎসকরা আপাতত এই তথ্য জানিয়েছেন।
নিখোঁজ ব্যক্তিদের তথ্য সম্পর্কে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কতজন নিখোঁজ রয়েছেন, এর নির্দিষ্ট তথ্য জেলা প্রশাসনের কাছে নেই। তবে উপাত্ত সংগ্রহের জন্য সেল গঠন করা হয়েছে। আমরা স্বজনদের আহ্বাবান জানিয়েছি নিখোঁজের তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে। দুই-একদিনের মধ্যে নিখোঁজ ব্যক্তিদের তথ্য জানা যাবে। যদি কেউ ডিএনএ নমুনা নিয়ে আসেন, তাহলে শনাক্ত করে তাকে পরবর্তীতে কবর শনাক্ত করে দেয়া হবে।
এখন পর্যন্ত যাদের মরদেহ শনাক্তের পর স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে তারা হলেন-পাথরঘাটা পৌরশহরের তালতলা এলাকার রাজ্জাক মাস্টার, বেতাগী উপজেলার রিয়াজ হাওলাদার, বরগুনা সদর ইউনিয়নের আমতলী গ্রামের জাহানারা বেগম, বামনা উপজেলার সপ্নিল। এই তিনজনের মরদেহ ঝালকাঠি থেকে স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া বরগুনা সদর হাসপাতালের মর্গ থেকে রাজিয়া সুলতানার মরদেহ বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
মরদেহ হস্তান্তরের সময় বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে বরগুনা -১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু, বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন এবং বরগুনার পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রাত ১১.৪৫ মিনিটের দিকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পৌঁছায় লাশবাহী গাড়ি। সারি সারি মৃতদেহ নামিয়ে মর্গে নিয়ে যান স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন রেডক্রিসেন্ট বরগুনার সদস্যরা। হাসপাতাল প্রাঙ্গণে কান্নায় ভেঙে পড়েন অপেক্ষমাণ স্বজনরা। ভিড় জমান উৎসুক মানুষ। সবাই শোকে স্তব্ধ হয়ে যান। পুরো এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
















