প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) চার কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মানিলন্ডারিং আইনে করা মামলায় খালাস পাওয়া নিরঞ্জন ও শাহজাহানকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে মঙ্গলবার সিনহার ঋণ আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় সহযোগিতার দায়ে অভিযুক্ত এ দুই আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান জানান, ফারমার্স ব্যাংকের চার কোটি টাকার ঋণ আত্মসাতে এ দুজন হলেন সহযোগী। বিচারিক আদালতে সেটি প্রমাণও হয়েছে। কিন্তু বিচারক বলেছেন, তারা সহযোগীও না, সুবিধাভোগীও না।
তিনি বলেন, আপিলে আমরা বলেছি তারা সুবিধাভোগী না বিচারকের এই পযবেক্ষণের সঙ্গে আমরা একমত। কিন্তু তারা সহযোগী, তারা ঋণ আবেদন না করলে অপরাধটা ঘটত না। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার দিনই তারা ঋণের আবেদনটা করেছিলেন। কাজেই এ দুজনকে খালাস দেয়াটা ঠিক হয়নি।
গত ৯ নভেম্বর দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ মামলার রায় দেন। রায়ে সাবেক প্রধান বিচারপতিকে ১১ বছর দণ্ড দেয়া হয়। এর মধ্যে ফারমার্স ব্যাংক থেকে চার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের দায়ে চার বছর এবং মানি লন্ডারিংয়ের আরেক ধারায় সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এছাড়া এসকে সিনহার ৭৮ লাখ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দু’টি সাজা একসঙ্গে চলবে বলে তাকে সাত বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে জানান আইনজীবীরা।
ওই দিন রায়ে মামলার দুই আসামি টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান এবং নিরঞ্জন চন্দ্র সাহাকে খালাস দেন আদালত। এছাড়া মামলার অপর আট আসামির মধ্যে ব্যাংকের সাবেক এমডি একেএম শামীমকে চার বছরের দণ্ড দেন। আর ফারমার্স ব্যাংকের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী), ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক ও সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায়কে তিন বছরের দণ্ড দেন।
পরে গত ২০ ডিসেম্বর মো. শাহজাহান এবং নিরঞ্জন চন্দ্র সাহার খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় দুদক আপিল করে।
এই মামলায় এসকে সিনহাসহ মোট আসামি ১১ জন। পলাতক থাকায় সাবেক এই প্রধান বিচারপতির অনুপস্থিতিতেই হয় বিচারকাজ। এর আগে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভুয়া ঋণের মাধ্যমে চার কোটি টাকা স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন।
















