স্টাফ রিপোর্টার :
চট্টগ্রাম উপজেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৪দিন ব্যাপী (১১-১৪ ডিসেম্বর) জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন।
শনিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে কর্ণফুলী উপজেলার মিলনায়তনে এক শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাইয়ে দিয়ে ক্যাম্পেইনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. আসিফ খান।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো.ইলিয়াছ চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী, নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা সুলতানা, এসিল্যান্ড শিরীন আক্তার,
পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সব্যসাচী নাথের সঞ্চলনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কর্ণফুলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বাবুল চন্দ্র নাথ, জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া, শিক্ষাবিদ প্রবীর মিত্র, স্বাস্থ্য পরিদর্শক অলক দাশগুপ্ত প্রমুখ।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন স্বাস্থ্য অধিদফতরের জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান ও পুষ্টি সেবার বাস্তবায়নে এ ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ( স্বাস্থ্য) ডা. শাহরিয়ার কবির বলেন, ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ কর্মসূচির শুভ সূচনা করেন।
ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল শিশুর অপুষ্টি, রাতকানা রোগ প্রতিরোধ, দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। হাম, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়াজনিত মৃত্যুর হার হ্রাসসহ সকল ধরনের মৃত্যুর হার হ্রাস করে।
সরকারের সকল মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতায় করোনা মোকাবিলায় সক্ষম হচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় করোনাকালীন এই কঠিন সময়ে দুই সপ্তাহব্যাপী ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন বাস্তবায়ন প্রশংসনীয়।
তিনি আরও বলেন, কোন শিশু যাতে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাসসুল খাওয়া থেকে বাদ না পড়ে সে লক্ষ্যে জেলার প্রত্যেক উপজেলা সদর ও ইউনিয়ন পর্যায়ে জনগণকে জানান দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি মসজিদ, হাটবাজার, বাস স্ট্যান্ড, নৌ-ঘাটসহ গুরুত্বপূর্ণস্থানেও ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। সরকারী প্রতিষ্টান, জনপ্রতিনিধি, আনসার-ভিডিপি ও এনজিও সংস্থাগুলো ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের যে কোন ধরণের অপপ্রচার ও গুজব রোধে প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম খোলা রাখা হয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন জানান, চট্টগ্রাম জেলার ১৫ উপজেলায় ২শ ইউনিয়নের ৬শ ওয়ার্ড, ১৫টি স্থায়ী কেন্দ্র, ১৫টি ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্র ও ৪ হাজার ৮শ অস্থায়ী কেন্দ্রে মোট ৭ লাখ ৯০ হাজার ৫০৪ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
৬-১১ মাস বয়সী ৯০ হাজার ১৯০ জন শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল ও ১২-৫৯ মাস বয়সী ৭ লাখ ৪ হাজার ৮৮২ জন শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। ১৪ জুন পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উপজেলাগুলোতে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
তিনি জানান উপজেলাগুলোতে ৫১ জন স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ১৫২ জন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ৫৫৭ জন স্বাস্থ্য সহকারী, ৬৮৬ জন পঃ পঃ সহকারী, ১৫৩ জন পঃ পঃ পরিদর্শক, ৯ হাজার ৬৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক, ১৫ জন স্যানিটারী ইন্সপেক্টর, ৫১০ জন সিএইচসিপি ও ৮২ জন স্যাকমো নিয়োজিত রয়েছে।
সিভিল সার্জন আরও জানান, চলতি ২০২১ সালের ৫-১৯ জুন অনুষ্ঠিত জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে ৬-১১ মাস বয়সী মোট ৮৮ হাজার ৯৬০ জন শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছিল, যার অর্জিত হার ৯৮ শতাংশ এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী মোট ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৮২৪ জন শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছিল, যার অর্জিত হার ৯৮.৩৫ শতাংশ।
এরপর নবসৃষ্ট কর্ণফুলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্ধারিত জায়গা পরিদর্শন করেন বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. শাহরিয়ার কবির, সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ হোসেন চৌধুরী।
















