ঢাকা: জুলাই গণহত্যায় হাসিনার আস্থাভাজন বিটিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক মুন্সী ফরিদুজ্জামান, উপ-মহাপরিচালক (বার্তা) সৈয়দা তাসমিনা আহমেদ ও নির্বাহী প্রযোজক শামসুল আলমের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির দাবিতে মানববন্ধন করেছে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলন।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধন শেষে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসার সঞ্চালনায় এবং প্রতিরোধ আন্দোলনের সভাপতি মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জুলাই ছাত্রজনতার আন্দোলনের যোদ্ধা ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান আরিফ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ডিআরইউর আপ্যায়ন সম্পাদক সলিমউল্লাহ মেজবাহ, ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এইচএম জাফর আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম কাজল, ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের স্থায়ী সদস্য খান কামরুল হুসাইন, দিলিপ কুমার, জাহাঙ্গীর আলম, সাংবাদিক রোজিনা আক্তার।
মানববন্ধনে মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালালেও তার এবং সাবেক তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদের আস্থাভাজন বিটিভির উপ-মহাপরিচালক (বার্তা) সৈয়দা তাসমিনা আহমেদ ও মুখ্য বার্তা সম্পাদকমুন্সী ফরিদুজ্জামান বহাল তবিয়তে রয়েছেন বিটিভিতে। উল্টো বিটিভি নিউজের দায়িত্ত্ব দেওয়া হয়েছে ২০০৯-২০১৪ সাল পর্যন্ত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস উইংয়ের সদস্য এই মুন্সী ফরিদুজ্জামানকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু তাই নয় ২০২৪’-এর ৭ জুলাই বিটিভি কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের আন্দোলন দমনে এবং সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী এ আরাফাতের নির্দেশে মিথ্যা প্রোপাকাণ্ডের যে সংবাদ প্রচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সেই কমিটির প্রধান করা হয় নির্বাহী প্রযোজক শামসুল আলমকে। দুঃখের বিষয় হলেও সত্যি ছাত্র হত্যার নেতৃত্বদানকারী শামসুল আলম এখন বিটিভির হয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সদস্য। একমাত্র রাষ্ট্রীয় এ টেলিভিশন চ্যানেলে হাসিনার আস্থাভাজনদের হাতে কতটুকু নিরাপদ তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।’
অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার বলেন, ‘শেখ হাসিনার আস্থাভাজন দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতিবাজ সাবেক সিনিয়র সচিব মো. মহসিনের প্রভাবে স্ত্রী তাসমিনা আহমেদ ও মুন্সী ফরিদুজ্জামান এখনও বড় অংকের টাকা লেনদেনের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়সহ সব ম্যানেজ করার দাম্ভিকতা দেখাচ্ছে। যার ফলে হাসিনা পালানোর ১ বছর পার হলেও তাদের বিষয়ে রহস্যজনক ভূমিকা পালন করছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।’
ফরিদুজ্জামান ও তাসমিনা গংদের হাত ধরেই রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও ভিডিও চিত্র যাচ্ছে সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের কাছে- এমন অভিযোগ বিটিভির একাধিক সূত্রে জানা যায় বলেও জানান তিনি।
লিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার বলেন, ‘বিটিভির একটি তদন্ত কমিটি রিপোর্টর অনুযায়ী, সাবেক মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম (অতিরিক্ত সচিব-পিআরএল ভোগরত) এবং উপ-মহাপরিচালক (অনুষ্ঠান ও বার্তা) সৈয়দা তাসমিনা আহমেদের নেতৃত্বে ঢাকা কেন্দ্রের সাবেক জেনারেল ম্যানেজার (চলতি দায়িত্ব) মাহফুজা আক্তার ও তার সিন্ডিকেট সদস্যরা ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ভুয়া বিল ভাউচার ও বাজেটের মাধ্যমে ১৩ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা অনিয়ম-দুর্নীতির করেছেন মর্মে তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দাখিল করে।’