ঢাকা: পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা, রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের জীবনে শান্তি, সম্প্রীতি, উন্নয়ন ও অগ্রগতির অভিযাত্রা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
আজ সোমবার (৫ মে) ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার অফিস কক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুকের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেন।
বিশেষ এ সাক্ষাতে সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার দেশে আধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা বিস্তারে অধিকতর গুরুত্ব দিচ্ছে। পার্বত্য অঞ্চলে এখন কোয়ালিটি এডুকেশন নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ সরকার পার্বত্য অঞ্চলের ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনাকে আরও সহজ করতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম তৈরি, স্যাটেলাইট পদ্ধতিতে দূরশিক্ষণ প্রদান এবং প্রত্যন্ত এলাকায় ছাত্রছাত্রীদের থাকা ও পড়াশুনা নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাওয়ার জন্য হোস্টেল বিল্ডিং নির্মাণে প্রকল্প নিয়েছে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেক বছর পার হয়ে গেলো, সে অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ দেশের মূলধারার সাথে এখনো পুরোপুরি সম্পৃক্ত হতে পারেনি। আমাদের সরকার এ বিষয়টিকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছে এবং সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা নিরাপত্তার বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখছি। সত্যিকার অর্থে পার্বত্য অঞ্চলে তেমন বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। তদুপরি বিদেশিদের নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা অত্যন্ত সচেতন আছি। পার্বত্য চট্টগ্রামে সকলের নির্ভয়ে অবাধ চলাচল, ঘোরাফিরা অব্যাহত রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ বছরের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝিতে কয়েকজন রাষ্ট্রদূত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভ্রমণ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করে গেছেন। এবারের ঈদ, পুঁজা পার্বণে বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার পর্যটক পার্বত্য চট্টগ্রামে বেড়াতে এসেছেন, তাদের থাকার জন্য বিকল্পভাবে ব্যবস্থাও করতে হয়েছে। কোনো সমস্যা তো হয়নি। বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করেই আমরা বিদেশিদের চলাচলের প্রতি বিশেষ খেয়াল রেখে থাকি। তার অর্থ এই নয় যে, পার্বত্য অঞ্চল একটি উত্তপ্ত এলাকা এখানে মানুষের চলাচল একেবারেই নেই।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হোক- এ পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যেই বাংলাদেশ সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।’
উভয়ের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারকরণ, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের প্রসঙ্গগুলো ওঠে আসে। বাংলাদেশের উন্নয়নে ব্রিটিশ সরকারের বরাবরের ন্যায় সহযোগিতা থাকবে এ আশাবাদ ব্যক্ত করে সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ‘বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ সরকার কাজ করছে।’
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে ব্রিটিশ সরকার সব সময়ই পাশে ছিল এবং আগামিতেও থাকবে।’
উপদেষ্টা এ জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ব্রিটিশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।
আলোচনাকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল খালেক, অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার, যুগ্মসচিব কংকন চাকমা, উপদেষ্টার একান্ত সচিব খন্দকার মুশফিকুর রহমান, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টার এপিএস শুভাশিষ চাকমা, ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাই কমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি পলিটিক্যাল এ্যালি বুট উপস্থিত ছিলেন।