দীর্ঘদিন পর নগরবাসীর প্রতিদিনের চাহিদা মোতাবেক পর্যাপ্ত পানি উৎপাদন করছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। চট্টগ্রাম ওয়াসার এখন পানি উৎপাদন ক্ষমতা দৈনিক ৫০ কোটি লিটারে। অপরদিকে নগরবাসীর প্রতিদিনের চাহিদাও দৈনিক ৫০ কোটি লিটার। এই প্রথম নগরীতে পানির চাহিদা এবং উৎপাদন সমান-সমান। পানির কোন ঘাটতি নেই।
কর্ণফুলী পানি শোধনাগার দ্বিতীয় প্রকল্পের ১৪ কোটি লিটার পানি উৎপাদনে আসার পর নগরীতে ওয়াসার পানি সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে উঠে। দীর্ঘদিন ধরে ওয়াসার পানি বঞ্চিত এলাকা বন্দর-পতেঙ্গা-হালিশহর ও কট্টলীবাসী এখন পুরোদমে পানি পাচ্ছে।
এখন চট্টগ্রাম ওয়াসার টার্গেট নগরীর সবচেয়ে উচু এলাকা-দক্ষিণ খুলশী, জালালাবাদ,ফিরোজশাহ এবং চট্টগ্রাম সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটিতে পানি সরবরাহ। নগরীর এসব উচু এলাকায় পানি সরবরাহের জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি খোঁজ করছেন ওয়াসা কর্তৃপক্ষ।
এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম চট্টগ্রাম নিউজকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে নগরীর যেসব এলাকায় ওয়াসার পানি যেত না, সেসব এলাকায় এখন পর্যাপ্ত পানি যাচ্ছে। বিশেষ করে পতেঙ্গা-বন্দর ও হালিশহর এলাকায় (যেখানে ওয়াসার পাইপ লাইন বিদ্যামান আছে) এখন প্রতিদিনই পানি পাওয়া যাচ্ছে।
কর্ণফুলী পানি শোধনাগার দ্বিতীয় প্রকল্প উৎপাদনে আসার পর এখন পানি সংকট নেই। এই প্রকল্প থেকে প্রতিদিন ১৪ কোটি লিটার পানি উৎপাদন হবে। আমরা এখন এই প্রকল্প থেকে প্রতিদিন ৯ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করছি। এখন যে পরিমান পানি উৎপাদন করছি তাতে নগরীতে পুরোপুরি চাহিদা মেটাতে পারছি।
এখন আমাদের পরবর্তী টার্গেট নগরীর পাহাড়ি এলাকা গুলোতে পানি সরবরাহ করা। বিশেষ করে দক্ষিণ খুলশী, জালালাবাদ,ফিরোজশাহ এবং চট্টগ্রাম সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটিতে পানি সরবরাহ। এসব উচু এলাকা গুলোতে পানি সরবরাহের জন্য আমরা স্পেশাল টাইপের মোটর খুঁজতেছি। এজন্য সমতল এলাকায় মোটর বসানোর জন্য আমাদের কিছু জায়গার দরকার।
গত দুই বছর আগে রাঙ্গুনিয়াস্থ শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার প্রথম প্রকল্পের ১৪ কোটি লিটার পানি উৎপাদনে আসার পর ওয়াসা কর্তৃপক্ষ নগরীতে প্রতিদিন ৩৬ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করতে সক্ষম হয়। গত ১৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার দ্বিতীয় প্রকল্পের ১৪ কোটি পানি উৎপাদনে আসলে ওয়াসার পানি সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় দৈনিক ৫০ কোটি লিটারে।
নগরীতে এখন পানির চাহিদা দৈনিক ৫০ কোটি লিটার। এই প্রথম নগরীতে পানির চাহিদা এবং উৎপাদন সমান-সমান। পানির কোন ঘাটতি নেই। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁিড়য়েছে পুরনো পাইপ লাইন। পুরনো পাইপ লাইনের কারনে শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার দ্বিতীয় প্রকল্পের ১৪ কোটি পানি পুরোদমে উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছেনা।
পানির উৎপাদনের প্রেসার বাড়ার সাথে সাথে নগরীর বিভিন্ন স্থানে পাইপ লাইন ফেটে যাচ্ছে। তারপরও ওয়াসার কর্তৃপক্ষ যেখানেই পাইপ লাইন লিকেজ হচ্ছে-সেখানে সাতে সাথে সাতে মেরামত করে দিচ্ছে। এখন নগরীর প্রত্যান্ত অঞ্চলে পানি যাচ্ছে।
যেখানে যেখানে ওয়াসার পানি পাইপ লাইন আছে-কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে পানি সরবরাহ ছিলনা-সেখানে এখন পানি সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানান প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম।