মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন, রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি: সবার পরনেই অভিন্ন কালো রঙা রেইনকোট। পেছনে শুধু সাদা অক্ষরে দৃশ্যমান ‘পুলিশ’। র্যাঙ্কব্যাজ না থাকায় বুঝা যাচ্ছিল না কে কোন পদমর্যাদার সদস্য- তাও। দিনভর বৃষ্টির দিনে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার পথঘাটে আজ এই রূপেই লকডাউন কার্যকরে দায়িত্ব পালন করেছে পুলিশ।
আজ (৬ জুলাই) সকাল থেকেই রাঙ্গুনিয়ায় দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হতে থাকে। বৃষ্টির মধ্যেই সরকার ঘোষিত লকডাউন কার্যকরে মাঠে সক্রিয় ছিল পুলিশ। বন্ধ ছিল হাট-বাজারসহ লকডাউনের আওতাভুক্ত সব ধরনের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও দূরপাল্লার গণপরিবহন।
বেলা ২ ঘটিকার সময় এই প্রতিবেদক উপজেলার প্রাণকেন্দ্র রোয়াজার হাট বাজারে গিয়ে দেখতে পান যে, চট্টগ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার (রাউজান- রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বৃষ্টির মধ্যেই সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যদেরকে নিয়ে লকডাউন কার্যকরে অভিযান চালাচ্ছেন।
বৃষ্টির সুযোগে অনেকেই ইচ্ছেমতো বের হতে চাইলেও তাদেরকে পরতে হচ্ছিল কঠিন জেরার মুখে। উপযুক্ত কারণ প্রদর্শন ব্যতীত কাউকেই যেতে দেওয়া হচ্ছিল না। লকডাউন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছিল ব্যবস্থাও। এভাবে সারাদিনই রাস্তাঘাট ও উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার জুড়ে পুলিশি অভিযান অব্যাহত থাকে। ছিল র্যাবের পেট্রলও।
এসময় সড়কে দুই একটি ছোটখাটো যানবাহন ছাড়া চলাচল করতে দেখা যায়নি লকডাউনের আওতাভুক্ত দুরপাল্লার ভারি কোনো যানবাহন।
এছাড়া পাড়া মহল্লা ও গলির ভেতরে অবস্থিত দুই একটি দোকান ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচাবাজার এবং ওষুধ ফার্মেসী ব্যতিত বন্ধ ছিল উপজেলার সব ছোট বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়ক গুলোতে টহল দিচ্ছে থানার পুলিশ সদস্যরা।
সম্প্রতি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাওয়ায় ২১ দফা বিধিনিষেধ আরোপ করে গত ১ জুলাই থেকে সারা দেশে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। সপ্তাহব্যাপী এই লকডাউনের সকল বিধিনিষেধ কার্যকর করতে শুরু থেকে মাঠে তৎপর রয়েছে পুলিশ প্রশাসন ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা প্রশাসন। স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের অপরাধে এ পর্যন্ত অনেকের বিরুদ্ধেই নেওয়া হয়েছে আইনগত ব্যবস্থা।
এ প্রসঙ্গে সহকারী পুলিশ সুপার (রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সম্মানিত অভিভাবক, পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক, পিপিএম স্যারের নির্দেশে লকডাউন বাস্তবায়নে পুলিশ অন্যান্য সকল সংস্থার সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করছে।
উপজেলার অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা যানবাহনকে সড়কে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে রাস্তায় বের হওয়ায় বেশকিছু যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। এছাড়া অনেক পথচারীকে আটক করার পর সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।