বান্দরবান: ছয় সদস্যের পরিবার নিয়ে বসবাস করেন বান্দরবান জেলার সুয়ালক ইউনিয়ন থেকে পাচঁ কিলোমিটার ভিতরে সুলতানপুর গ্রামের শেষ প্রান্তে পাহাড়ের টিলায় সরকারি খাস জমিতে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে বসবাস করছেন মহেশখালীর সুমন আলী (ছদ্মনাম)। পেশায় দিন মজুর, কৃষি কাজ ও দিনমজুরের কাজ করে কোন রকম সংসার চালায়। কোরবানির ঈদ বলতে তাদের কোন বাড়তি আনন্দ নেই। চলাচলের সড়ক থেকে এক কিলোমিটার ভিতরে তাদের ঘর। যাতায়াতের কোন রাস্তা নাই। পাহাড়ের জিরি বেয়ে যেতে হয় তাদের ঘরে। টিনশেড় দিয়ে মোড়ানো ঘরটি তাদের। আদ-দ্বীন আন নাসীহা ফাউন্ডেশনের কর্মী, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার হাফেজ মাওলানা এনামুল হক কোরবানির মাংস ভিতরণ করতে গিয়ে সুমন আলীর সঙ্গে কথা বলেন এবং জানতে চান, কুরবানির মাংস কতটুকু পেয়েছেন? সুমন আলী বলেন, ‘এক বাটি রান্না করা মাংস পরিবারের ছয় সদস্য মিলে খেয়েছি। এছাড়া, আর কোন মাংস পাই নি। তাদের ঘর থেকে এক কিলোমিটার দূরে এক পরিবার কোরবানি করেছিল, তারা এক বাটি রান্না করা মাংস দিয়েছিল ‘
ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার (১৮ জুন) চট্টগ্রামের একঝাঁক তরুণ ওলামায়ে কিরামের তত্ত্বাবধানে আদ-দ্বীন আন নাসীহা ফাউন্ডেশনের ব্যানারে ‘কুরবানী হোক সবার তরে ২০২৪’ কর্মসূচীতে বান্দরবান পার্বত্য জেলার সুয়ালক সুলতানপুরের গহীন পাহাড়ি এলাকায় মাংস বিতরণ করা হয়। এছাড়া, হলুদিয়া গহীন পাহাড়ি জনপদ, হাইচতলী, বাজালিয়ার বটতল পাহাড়ে বসবাসরত হতদরিদ্র ৭০ পরিবারের মাঝে কোরবানি মাংস বিতরণ করেন তরুণ ওলামায়ে কিরামের সেচ্ছাসেবকরা।
আদ-দ্বীন আন নাসীহা ফাউন্ডেশনের কর্মী আহমদ উল্লাহ নামের তরুণ আলেম বলেন, ‘দেশ বিদেশের বিভিন্ন দাতাদের অনুদানে হতদরিদ্র ও অনুন্নত এলাকায় কোরবানি মাংস বিতরণের উদ্দেশ্যে ঈদুল আজহার পূর্বের দিন একটি গরু কিনি আমরা। যা ঈদুল আজহার পরের দিন দশজন সেচ্ছাসেবক টিমের সেচ্ছাশ্রমে বিতরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিই। আল্লাহর সন্তুষ্টি ও ভালবাসা অর্জনই সব সেচ্ছাসেবী ও দাতার লক্ষ্য। তাই, আমরা দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করি; যাতে ভবিষ্যতে প্রতিটি মানবিক কাজ স্বচ্ছতার সঙ্গে আঞ্জাম দিতে পারি।’