মুসলমানদের ইবাদতের শ্রেষ্ঠ দিবস জুমা। এ দিন উত্তমরূপে ওজু ও গোসল করে সুন্দর পোশাকে পরিপাটি হয়ে সুগন্ধি মেখে নামাজ পড়ার মাধ্যমে আগের জুমা থেকে বর্তমান জুমা পর্যন্ত সংগঠিত সব গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। অথচ এখনও এমন অনেকেই আছেন, যারা জুমার নামাজ পড়ার নিয়মই জানে না। কীভাবে আদায় করবেন জুমা?
সঠিক নিয়মে নামাজ পড়ার ফজিলত:
সুন্নাতের অনুসরণে জুমা আদায়ের সাওয়াব ও ফজিলত অনেক বেশি। হাদিসে এসেছে- জুমার দিন যে ব্যক্তি গোসল করে প্রথম ভাগে পায়ে হেঁটে মসজিদে যায়, ইমামের খুব কাছাকাছি গিয়ে বসে, মনোযোগ দিয়ে খুতবাহ শোনে, কোনো কিছু নিয়ে খেল-তামাশা করে না, ওই ব্যক্তির প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য রয়েছে বছরব্যাপী রোজা পালন এবং সারা বছর রাত জেগে ইবাদত করার সমতুল্য সাওয়াব। সুবহানাল্লাহ!
জুমার নামাজ দুই রাকাআত
জুমার নামাজের আগে দুইটি খুতবাহ মনোযোগ সহকারে শোনার পর ইমামের সঙ্গে দুই রাকাআত নামাজ আদায় করা। এদিন জোহরের নামাজের পরিবর্তে দুই রাকাআত জুমার নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানদের উপর ফরজ।
জুমার নামাজের ওয়াক্ত
জুমার দিন জোহরের ওয়াক্তে এ নামাজ পড়তে হয়। জুমা পড়ার জন্য মসজিদে উপস্থিত হয়ে জামায়াতের সঙ্গে পড়তে হয়।
জুমার নামজের জন্য প্রস্তুতি
জুমার দিন দুপুরের আগে গোসল করে পরিষ্কার পোশাক পরে সুগন্ধি/তেল ব্যবহার করে আজানের সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে উপস্থিত হওয়া।
মসজিদে অবস্থান
মসজিদে গিয়ে বসার আগেই দুই রাকাআত দুখুলুল মসজিদ আদায় করা। অনেকেই নামাজ শুরু হওয়ার আগে দুখুলুল মসজিদ ২ রাকাআত, তাহিয়্যাতুল ওজু ২ রাকাআত, কাবলাল জুমা ৪ রাকাআত নামাজ পড়ে থাকেন। সুযোগ থাকলে খুতবাহর আগে এ নামাজগুলো পড়ে নেয়া। তবে এই নামাজগুলো জুমার নামাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।
খুতবাহ শোনা
ইমাম মিম্বারে ওঠলে মনোযোগের সঙ্গে খুতবাহ শোনা। ইমাম দুইটি খুতবাহ দেবেন। প্রথম খুতবায় নসিহত দেবেন। দ্বিতীয় খুতবার সময় অনেক দোয়া করা হয়। এ সময় ইমামের দোয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমিন বলা।
জুমার নামাজ পড়া
জুমার নামাজ পড়ার জন্য মুয়াজ্জিন খুতবা দেয়া শুরু করলে নামাজের জন্য দাঁড়ানো। অনেকেই খুতবাহ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইমাম মিম্বার থেকে নামার আগেই নামাজের জন্য দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দেন। এমনটি কোনোভাবেই করা যাবে না। এটা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে।
এভাবে ইমামের সঙ্গে দৃঢ়স্থিরভাবে জুমার দুই রাকাআত নামাজ আদায় করা। জুমার নামাজের সালাম ফেরানোর পর নিয়মিত তাসহিব ও আমল করা।
জুমার নামাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাড়াহুড়ো করে মসজিদ থেকে বের হওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা না করা। বরং মসজিদে নামাজে অংশগ্রহণকারী অন্য কারো ইবাদত-বন্দেগিতে সমস্যা হয় এমন আওয়াজ ও কাজ না করা।
প্রসঙ্গত, জুমার দিনের সুন্নাত কাজগুলো সুন্দরভাবে সম্পাদন করা জরুরি। আর তাতে রয়েছে রহমত ও বরকত। এ দিন আসর থেকে মাগরিবের ইবাদত ও মসজিদে অবস্থান অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তা যথাযথভাবে আদায় করলে আল্লাহ তাআলা ইবাদতকারীর দোয়া কবুল করে নেন